মুখ্যমন্ত্রীর খেয়াল। ছন্দা গায়েনের সঙ্গে ইয়ালুং কাং শৃঙ্গ অভিযানে গিয়ে নিখোঁজ শেরপা দাওয়া ওয়াংচুক-এর পরিবারের হাতে বৃহস্পতিবারই তিনি তুলে দেবেন এক লক্ষ টাকার চেক। কিন্তু ইচ্ছে হলেই তো হবে না! উত্তরবঙ্গ সফররত মুখ্যমন্ত্রীর হাতে চেক তো পৌঁছে দিতে হবে! এ দিকে বুধবার সন্ধ্যায় ততক্ষণে সরকারি অফিসের ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
এখন উপায়!
অগত্যা সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তড়িঘড়ি ডেকে পাঠানো হল যুবকল্যাণ অধিকর্তাকে। অফিস থেকে বেরিয়ে তিনি তখন প্রায় বাড়ি পৌঁছে গিয়েছেন। একই ভাবে ডেকে পাঠানো হল বনগাঁর বাসিন্দা, ডিরেক্টরেটের আর এক কর্মীকে। তাঁর হেফাজতেই থাকে চেকবই। জরুরি তলব পেয়ে তাঁরা তড়িঘড়ি ফিরে এলেন। যুবকল্যাণ দফতরের যে যুগ্ম-অধিকর্তা শিলিগুড়ি গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে চেকটি তুলে দেবেন, তাঁর জন্য রাতের ট্রেনে প্রয়োজনীয় আসন সংরক্ষণও করে ফেলা হল।
আয়োজনের ত্রুটি নেই। তবু আর এক দফা ঝঞ্ঝাট এড়ানো গেল না। শেষ মুহূতের্র্ দেখা গেল, এক লক্ষ টাকার চেক ছাড়তে হলে দফতরের আর্থিক উপদেষ্টার অনুমোদন প্রয়োজন। এত রাতে যা প্রায় অসম্ভব।
এ বার মাথায় হাত পড়ল কর্তাদের। শেষ পর্যন্ত ঠিক হল, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চেক অবশ্যই দেবেন। তবে তা যুব দফতরের নয়। আপাতত দার্জিলিঙের জেলাশাসকের কোনও একটি তহবিল থেকে ওই চেক দেওয়া হবে। পরে তা পূরণ করে দেবে যুবকল্যাণ দফতর।
এর মধ্যে রাজনীতির গন্ধও পাচ্ছেন কেউ কেউ। ছন্দা গায়েনের সঙ্গে একই অভিযানে গিয়েছিলেন ওয়াংচুক। কিন্তু গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার নেতাদের অভিযোগ ছিল, ছন্দার পরিবারের পাশে রাজ্য সরকার যে ভাবে দাঁড়িয়েছে, ওয়াংচুকের পরিবারের ক্ষেত্রে তা হয়নি। এ নিয়ে ফেসবুুক থেকে শুরু করে প্রকাশ্যে একাধিক বার রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন বিমল গুরুঙ্গও।
রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, আজ, বৃহস্পতিবার ওয়াংচুুকের পরিবারের হাতে এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দিয়ে সেই সমালোচনাই বন্ধ করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে কথায় কথায় এক কর্তা বলেই ফেললেন, “ওয়াংচুুকের পরিবারের হাতে চেক তুলে দেওয়ায় কোনও অসুুবিধে নেই। শুধুু ভাবনার কথাটা যদি একটু আগে জানা যেত, তা হলে এই হয়রানিটা হত না।”