মারকাটারি ব্যাটিং শুরু করেছিল আবির্ভাবেই। কিন্তু মাঝখানের কয়েক ওভারে রান বিশেষ পায়নি। অবশেষে জবরদস্ত উত্তুরে হাওয়ার সৌজন্যে ফের চালিয়ে খেলতে শুরু করে দিল শীত।
আসলে তার পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল একটি ঘূর্ণাবর্ত। শীতের ধুমধাড়াক্কা ব্যাটিংয়ে লাগাম দিয়েছিল সে। অবশেষে উত্তর ভারত থেকে আসা কনকনে ঠান্ডা হাওয়াই সেই ঘূর্ণাবর্তকে ঠেলে সরিয়ে দিয়েছে। ফলে উত্তরে কোচবিহার থেকে শুরু করে দক্ষিণে ডায়মন্ড হারবার পর্যন্ত দ্রুত নামছে পারদ। কোথাও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চলতি সময়ের স্বাভাবিকের থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমে গিয়ে শৈত্যপ্রবাহের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শীতকালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে পাঁচ ডিগ্রির বেশি নামলে আবহবিজ্ঞানের পরিভাষায় সেটাকে বলে শৈত্যপ্রবাহ। দিল্লির মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, চলতি সপ্তাহেই রাজ্যের কিছু এলাকা শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে।
দিল্লি, পঞ্জাব, হরিয়ানা-সহ গোটা উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম ভারত এখনই শীতে জবুথবু। তুষারপাত হচ্ছে হিমাচলপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ে। আবহবিদেরা বলছেন, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার জেরে উত্তর ভারতে যে-কনকনে ঠান্ডা বাতাসের তাণ্ডব চলছে, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড হয়ে তা নেমে এসেছে পশ্চিমবঙ্গেও। মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়ে গিয়েছে। বিহার-ঝাড়খণ্ডের কোথাও কোথাও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে ৫-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সেখানকার সেই ঠান্ডা বাতাস ইতিমধ্যেই ঢুকে পড়েছে বাংলায়। আগামী দু’তিন দিনে উত্তুরে হাওয়ার তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা।
মৌসম ভবন জানাচ্ছে, মঙ্গলবার আবার একটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝা হানা দিয়েছে পাকিস্তানে। সেই পশ্চিমী ঝঞ্ঝা জম্মু-কাশ্মীর হয়ে নেমে আসবে উত্তর ভারতে। তার প্রভাবে চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি উত্তর ভারতে ফের আর এক দফা শৈত্যপ্রবাহ বইবে। এবং তারই জেরে পশ্চিমবঙ্গে শীতের ব্যাটে আবার ধুন্ধুমার দেখা যাবে বলে আবহবিদদের আশা। পশ্চিমী ঝঞ্ঝা যত দিন এ ভাবে আফগানিস্তান-পাকিস্তান হয়ে জম্মু-কাশ্মীরে ঢুকতে থাকবে, তত দিন শীতের টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং জারি থাকবে বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা।
মঙ্গলবারের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার নিরিখে রাজ্যের সমতলে শীতলতম এলাকা হল কোচবিহার। সেখানে এ দিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬.৯ ডিগ্রিতে নেমে যায়। যা কোচবিহারের এই সময়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার থেকে তিন ডিগ্রি কম। জলপাইগুড়ির সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ৮.৮ ডিগ্রিতে। দক্ষিণবঙ্গে বীরভূমের শ্রীনিকেতনে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯.৪ ডিগ্রিতে নেমে গিয়েছে। ১০ ডিগ্রির নীচে তাপমাত্রা নেমেছে বাঁকুড়া (৯.৫) এবং আসানসোল (৯.৬) শহরেও। এক ধাক্কায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনেকটা নেমেছে মালদহ (১০.১), বহরমপুর (১০.২) কৃষ্ণনগর (১০.৪) এবং দিঘায় (১০.৪)। এ দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১২.৬ ডিগ্রিতে। যা এই সময়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার থেকে এক ডিগ্রি কম।