মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসেকে মহান করে দেখাতে সঙ্ঘ পরিবার যে ভাবে উদ্যোগী হয়েছে, তার প্রতিবাদে শুক্রবার পথে নামল কংগ্রেস এবং বামেরা। গাঁধীর মৃত্যুদিন বরাবরই কংগ্রেস পালন করে। নাথুরামের নামে উত্তরপ্রদেশে হিন্দু মহাসভা মন্দির নির্মাণের ঘোষণা করায় বিতর্কে এ বার গাঁধী-বার্ষিকীতে পথে নামলেন বাম নেতারা।
এ দিন তাঁদের পথে নামা প্রসঙ্গে ধর্মতলার সভায় বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর ব্যাখ্যা, “বহু ক্ষেত্রেই আমরা গাঁধীর নীতির বিরুদ্ধে। কিন্তু কোনও কোনও ক্ষেত্রে গাঁধীর নীতিকে সমর্থন করি। আজ গাঁধীর হত্যার দিবসকে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি দিবস হিসাবে পালনে বাধ্য হয়েছি।” বিমানবাবু জানান, তাঁরা গাঁধীর অর্থনৈতিক নীতির বিরুদ্ধে আগেও যেমন ছিলেন, আজও আছেন। কিন্তু যে ভাবে আরএসএসের তরফে গডসের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো করা হচ্ছে, তার প্রেক্ষিতেই সমাবেশ।
গডসের মন্দির তৈরি হলে দেশের ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সংবিধানের উপর আঘাত আসবে বলে মনে করে কংগ্রেসও। ওই মন্দির তৈরির বিরুদ্ধে এ দিন বিধান ভবন থেকে গাঁধী মূর্তি পর্যন্ত মিছিল করে তারা। সাম্প্রদায়িকতা-বিরোধী ওই মিছিল শেষে দলের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, “গডসের মন্দির তৈরিতে প্রধানমন্ত্রী বাধা দিচ্ছেন না। বরং মদত দিচ্ছেন। গাঁধীর হত্যাকারীর মন্দির তৈরি হলে বিশ্বের কাছে ভারতের মুখ পুড়বে।”
প্রায় কংগ্রেসের সুরেই গাঁধীর জন্য পথে নামা নিয়ে বিমানবাবু বলেছেন, “তিনি যে অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তি ছিলেন এবং স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর বিরাট অবদান ছিল তা সিপিএম স্বীকার করে।” তাঁর বক্তব্য, “গাঁধী হত্যার পরে তাঁর সংগ্রামী ভূমিকার কথা জ্যোতি বসু বিধানসভায় স্বীকার করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানান। আমরাও গাঁধীর ভূমিকাকে শ্রদ্ধা করি।” গাঁধী সবাইকে নিয়ে চলার আদর্শের কথা উল্লেখ করে বিমানবাবু বলেন, “প্রবীণ তোগাড়িয়াদের নেতৃত্বে আমাদের রাজ্যেও ধর্মান্তরণ শুরু হয়েছে। রামপুরহাটে হয়েছে। এর প্রতিবাদে সবাইকে এক হতে হবে।”