উত্তরবঙ্গে এইমসের ধাঁচে হাসপাতালের দাবিতে রাজনৈতিক আন্দোলনের চেষ্টা ফের গতি পাচ্ছে। এ বার আসরে বাম শরিক ফরওয়ার্ড ব্লক। তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে সিপিএমও।
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের বদলে দক্ষিণবঙ্গের কল্যাণীতে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি করা হবে বলে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ঘোষণা করেছেন নতুন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন। রায়গঞ্জে এইমস অসুস্থ কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির স্বপ্ন, এই প্রচারকেই দীর্ঘ দিন সামনে রেখেছিলেন তাঁর ঘরণী দীপা দাশমুন্সি। কিন্তু তা সত্ত্বেও রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে এ বার হারতে হয়েছে দীপাকে। তার পরেই এখন এইমস-ব্যাটন হাতে তুলে নিতে চাইছে বামেরা। সব দলের উত্তরবঙ্গের জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সেপ্টেম্বরে কনভেনশন করতে উদ্যোগী হয়েছেন চাকুলিয়ার ফ ব বিধায়ক আলি ইমরান রাম্জ (ভিক্টর)। সেখানে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে প্রতিবেশী রাজ্যের জনপ্রতিনিধিদেরও।
ভিক্টরের যুক্তি, উত্তরবঙ্গে এইমস হলে শুধু উত্তরের ৬টি জেলাই নয়, পার্শ্ববর্তী কিষাণগঞ্জ-সহ বিহারের একাংশ বা উত্তর-পূর্বের অসম, ত্রিপুরার মানুষও তাতে উপকৃত হবেন। তাই উত্তরবঙ্গে এইমস গড়ার দাবিতে সর্বদল কনভেনশনের সিদ্ধান্ত। ভিক্টরের কথায়, “আমাদের কথা হল, উত্তরের এইমস উত্তরেই হোক। রায়গঞ্জ বা উত্তর দিনাজপুরের কোথাও বা উত্তরবঙ্গের অন্য কোথাও হলেও কোনও আপত্তি নেই।” এই দাবিকে সমর্থন করার জন্য উত্তরবঙ্গের মোট ৫৪টি কেন্দ্রের বিধায়ক এবং সব দলের সাংসদকে আমন্ত্রণ করা হবে কনভেনশনে। তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের মন্ত্রীরা যেমন ডাক পাবেন, তেমনই আমন্ত্রণ পাবেন মৌসম বেনজির নূরের মতো কংগ্রেস সাংসদেরাও। আমন্ত্রণ যাওয়ার কথা বিহার, অসমের জনপ্রতিনিধিদের কাছেও।
উত্তরবঙ্গে এইমস হওয়া কেন দরকার ছিল, সম্প্রতি লোকসভায় তা নিয়ে সরব হয়েছেন রায়গঞ্জের বর্তমান সাংসদ, সিপিএমের মহম্মদ সেলিম। তিনি সোমবার বলেন, “কনভেনশনের উদ্যোগ ফ ব নেতৃত্বের। আমি অবশ্যই সেখানে থাকার চেষ্টা করব।” সাংসদের যুক্তি, “উত্তরবঙ্গে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর কী অবস্থা, এনসেফ্যালাইটিস মোকাবিলা থেকেই বোঝা যাচ্ছে! এইমস থাকলে উত্তরবঙ্গ এবং সংলগ্ন এলাকার মানুষের উপকার হয়।”
মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোড়া থেকেই চেয়েছিলেন, এইমস হোক কল্যাণীতে। রায়গঞ্জে নয়। এখন উত্তরবঙ্গের বঞ্চনার প্রশ্ন সামনে এনে বামেরা দেখতে চায়, তৃণমূল ওই কনভেনশনে সাড়া দেয় কি না। তৃণমূল না এলে তারা বলতে পারবে, উত্তরবঙ্গের বঞ্চনার প্রতিবাদে রাজ্যের শাসক দল আদৌ আন্তরিক নয়। তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতা বলছেন, “রায়গঞ্জে কিছু অসুবিধা ছিল বলেই এইমস হয়নি। এই নিয়ে রাজনীতির তো কিছু নেই! তা ছাড়া, কেন্দ্রের কাছে আমরা দাবি জানিয়েছি, কল্যাণীর পরে উত্তরবঙ্গেও এইমস হোক।”