এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রাবাসে কোরপান শাহ খুনের ঘটনায় জড়িত ৯ অভিযুক্তকে ধৃত প্রথম বর্ষের ছাত্র জসিমুদ্দিন চিহ্নিত করেছেন বলে দাবি করলেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তাঁদের আরও দাবি, ছাত্রাবাসের চার ইন্টার্ন এবং পাঁচ হবু চিকিৎসককে চিহ্নিত করে তাঁদের নামও জানিয়েছেন জসিমুদ্দিন।
ওই ঘটনায় প্রথমে লালবাজারের অভিযোগ ছিল, জসিমুদ্দিনকে গ্রেফতার করার পর থেকে তিনি তদন্তে অসহযোগিতা করছেন। তা হলে তিনি এখন সবার নাম বলে দিলেন কী ভাবে? গোয়েন্দাদের দাবি, ধৃত দুই ক্যান্টিন-কর্মীর সামনে বসিয়ে জসিমুদ্দিনকে জেরা করতেই তিনি ভেঙে পড়েন। ১৬ নভেম্বর ছাত্রাবাসে ওই খুনের ঘটনায় কোন কোন ইন্টার্ন ও হবু চিকিৎসক নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তা-ও জেরায় জানান জসিমুদ্দিন।
এর আগে দুই ক্যান্টিন-কর্মী কার্তিক মণ্ডল ও রুবি আন্দিয়া গোয়েন্দাদের জানিয়েছিলেন, ওই খুনের সঙ্গে ছাত্রাবাসের ইন্টার্ন এবং সিনিয়র, জুনিয়র ছাত্র মিলিয়ে প্রায় ১০-১২ জন জড়িত। কিন্তু তাঁরা কোনও অভিযুক্তের নাম বলতে পারেননি বলে তদন্তকারীদের দাবি। তাই জসিমুদ্দিনের স্বীকারোক্তি তাঁদের প্রয়োজন ছিল।
শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতের দ্বিতীয় বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জাবনবন্দি দেন জসিমুদ্দিন। তদন্তকারীরা অনুমান করেছিলেন, ওই জবানবন্দি তাঁদের কাজে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে তদন্তে নতুন করে অগ্রগতি ঘটবে বলে দাবি করেছিলেন তাঁরা।
তবে অভিযুক্তদের নাম জানতে পারলেও তাঁদের গ্রেফতার করা হবে কি না, তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে লালবাজার। এনআরএস-কাণ্ডে নির্দোষ ছাত্রদের হেনস্থা না করার আবেদন জানিয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে চিঠি দিয়েছিল তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। সেই সঙ্গে তদন্তকারীরা যাতে ওই ছাত্রাবাসের আবাসিকদের জিজ্ঞাসাবাদ না করেন, সে জন্য তৃণমূলের স্বাস্থ্য সেলের পক্ষ থেকে পুলিশকে চাপ দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ ওঠে। সে কারণে ঘটনার পরে দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও মূল অভিযুক্তেরা কেউ ধরা পড়েনি বলে লালবাজার সূত্রে খবর। পুলিশের একাংশের অভিযোগ, যে সব অভিযুক্ত ইন্টার্ন ও সিনিয়র ছাত্রের নাম কোরপান-খুনে উঠে এসেছে, তাঁদের একাংশ শাসকদলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। ফলে তাঁদের গ্রেফতার না করে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চাইছে পুলিশ।