সীতারাম ইয়েচুরি।
সংসদীয় দলের অন্দরমহল থেকে রাজ্যসভা— সীতারাম ইয়েচুরির বিদায় সংবর্ধনা হয়ে উঠল সিপিএমের ‘ঐতিহাসিক ভুলে’র স্মৃতিকথা!’
ইয়েচুরিকে রাজ্যসভা থেকে বিদায় জানাতে গিয়েই সব দলের নেতাই তাঁকে ফের প্রার্থী না করার জন্য সিপিএমের সিদ্ধান্তকে তুলোধোনা করলেন। সকলেই ছিুলেন দৃশ্যত আবেগতাড়িত। অকালি দলের নরেশ গুজরাল সরাসরিই বলে ফেললেন, ‘‘সিপিএম তার ঐতিহাসিক ভুলের জন্য প্রসিদ্ধ! সেই ১৯৯৬-এ জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী না হতে দেওয়া থেকে আজ ইয়েচুরিকে রাজ্যসভায় পাঠাতে মানা। অথচ ইয়েচুরির জন্য রাজ্যসভার আসন তাদের থালায় সাজিয়ে দেওয়া হয়েছিল!’’ রাজ্যসভায় ইয়েচুরি বসতেন রামগোপাল যাদবের পাশে। সেই রামগোপাল বললেন, ‘‘ভারতের সংবিধান বদলাতে পারে। অথচ এঁদের পার্টির সংবিধান বদলাতে পারে না!’’ পরের অধিবেশনে তাঁর বাঁ দিকের আসনটি ফাঁকা থাকবে বলতে গিয়ে কান্নায় রুদ্ধ হয় রামগোপালের কণ্ঠ।
আরও পড়ুন: ‘ম্যানমেড’ কেন, ব্যাখ্যা সেচমন্ত্রীর
রাজ্যসভায় আজকের ওই সময়টুকু সাংসদ ইয়েচুরির জন্য যদি মর্যাদার পালক হয়ে থাকে, প্রকাশ কারাটদের জন্য ততটাই বিড়ম্বনার! কারাটদের অস্বস্তি বাড়িয়েই কংগ্রেসের গুলাম নবি আজাদ বলেছেন, ‘‘ইয়েচুরি কোনও পার্টির নন। গোটা বিপক্ষ, গোটা দেশের সম্পত্তি। সিপিএমের নিয়ম পুরো আমেরিকা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের ব্যবস্থার মতো! দু’দফার বেশি কেউ থাকতে পারবেন না। আপনি দলের প্রধান। দলের সংবিধান বদলে আবার ফিরে আসুন!’’ সরকারের তরফে অরুণ জেটলিও বলেছেন, ইয়েচুরি যে বক্তৃতাতেই অংশ নিয়েছেন, তার মান অন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। সেই সঙ্গেই জেটলির রসিকতা, ‘‘উনি কখনও সরকারে যোগ দেননি বলে একটা ফাঁক রয়ে গিয়েছে। তাই আদর্শগত দিক থেকে এমন অনেক পরামর্শ দেন, যার রূপায়ণ সম্ভব নয়!’’
রাজনীতিতে ‘চিরশত্রু’ হলেও ইয়েচুরিকে আজ কুর্নিশ জানিয়েছেন তৃণমূলের ডেরেক ও’ব্রায়েনও। তাঁর মন্তব্য, ‘‘উনি ‘লেফট ইজ অলওয়েজ রাইট’ বলে বই লিখছেন। সেটাও বিশ্বাস করি না। কিন্তু বিপক্ষের স্ট্রাইকার ভালো হলে তার কদর করতেই হয়।’’ ডেরেকের আরও সংযোজন, ‘‘আমার মেয়ে বলেছে, চুল কলপ করা ছেড়েছি বলে আমাকে নাকি ইয়েচুরির মতো দেখতে হয়ে যাচ্ছে! এ বার সতর্ক থাকতে হবে!’’