বন্ধের ঘোষণা শুনেই পাহাড় ছাড়ছেন অনেকে। মঙ্গলবারও শিলিগুড়িতে নেমে এলেন এমন অনেক পর্যটক। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ দার্জিলিং মেল এনজেপি ছুঁতেই মাইকে শোনা গেল শুভেচ্ছা বার্তা— আপনাদের এই অঞ্চলে স্বাগত। প্ল্যাটফর্মে ধরে এগিয়ে পর্যটক ও যাত্রীরা চলমান সিড়ি ধরে নীচে নামতেই, গোলাপ ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হল তাঁদের। এক তরুণী ও তাঁর এক সহযোগী। তাঁরাই পর্যটকদের বললেন, ‘‘বিশ্ব পর্যটন দিবসে এই এলাকায় আপনাকে স্বাগত। এখানে আপনার থাকার সময়টা আনন্দের হোক।’’ সামনে ব্যানারে লেখা ‘পর্যটন সবার জন্য’। এই থিমকে সামনে রেখেই উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও ডুর্য়াসে পালন হল বিশ্ব পর্যটন দিবস।
সরকারিভাবে এনজেপি স্টেশন থেকে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। পরে নির্মিয়মাণ মেগা ট্যুরিজম হাব গজলডোবাকে ঘিরে ডুয়ার্সের একটি অংশে বাইক মিছিল করে থিমের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হল। শুধু তাই নয়, অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসাবে মালবাজারে রাজ্যের প্রথম পুরসভায় পর্যটকদের জন্য স্থায়ী সহায়তা কেন্দ্রও খোলা হল। সন্ধ্যায় রাজ্য পর্যটন দফতর এবং ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন শিলিগুড়িতে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
পাহাড়ের ঘোষিত বন্ধের জেরে সমস্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। তবে অনুষ্ঠান চলেছে পূর্ব ঘোষণা মতো। এতোয়ার কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘পর্যটন এমন একটি বিষয় যার মাধ্যমে সবাইকে একসূত্রে বাঁধা যায়। আমরা সেই প্রচারের কাজই করেছি।’’
রাজ্যের মধ্যে মালবাজার পুরসভাই প্রথম পর্যটকদের জন্যে স্থায়ী সহায়তা কেন্দ্র খুলল। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক মুক্তা আর্য্য এবং পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতিকে পাশে রেখে এসজেডিএ চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী এই কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। পুরসভার পর্যটক আবাস ‘উদিচী’র এক তলায় কেন্দ্রটি করা হয়েছে। এখান থেকে ডুয়ার্সের যাবতীয় তথ্যই মিলবে। ডুয়ার্সে আসা পর্যটকদের জন্য এসজেডিএর উদ্যোগে সান্ধ্যকালীন শিক্ষামূলক ও পরিবেশবান্ধব পার্ক গড়ার কথা জানান সৌরভবাবু।
এ দিনই জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন ও বনদফতর যৌথ ভাবে গরুমারা ও লাটাগুড়িকে গ্রিনজোন ঘোষণা করে। বনকর্মীরা জানান, জঙ্গল সাফারিতে ১০০ টাকার একটি পাটের ব্যাগ নিতে পর্যটকদের। জঙ্গলে ঘোরার সময়ে আবর্জনা সেখানে না ফেলে এই ব্যাগে ভরে এনে ফেরত দিলে মিলবে ৭০ টাকা। লাটাগুড়ির গরুমারা প্রকৃতি বীক্ষণ কেন্দ্রে বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন। লাটাগুড়িকেও প্লাস্টিক মুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়।