প্রস্তাবিত করিডরের নকশা। —নিজস্ব চিত্র।
কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে বারবার দুর্ঘটনা এড়াতে সেখানে ছ’লেনের ‘এলিভেটেড করিডর’ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই করিডর তৈরির জন্য জমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪০০ কোটি টাকা দেওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রাজ্য সরকারের তরফে সম্মতিপত্র এখনও না পাওয়ায় আপাতত আটকে গিয়েছে এলিভেটেড করিডর তৈরির কাজ।
কোনা এক্সপ্রেসওয়েকে দুর্ঘটনামুক্ত করতে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতোই রাজ্যের হাইওয়ে ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষজ্ঞ সংস্থা রাইটস-কে সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিল। সেই ডিপিআর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয় রাইটস। পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই করিডর তৈরির জন্য খরচ ধরা হয়েছে ২০০০ কোটি টাকা। তবে এর জন্য সাঁতরাগাছি সেতুর কাছে যে ১০ হেক্টর জমির প্রয়োজন, তা অধিগ্রহণ বাবদ ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া নিয়েই রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছিলেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই টাকা দেওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে সম্মতিপত্র না মেলায় আপাতত এই প্রকল্প আটকে রয়েছে।
জমির ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে সম্মতিপত্র কেন দিচ্ছে না রাজ্য সরকার? পূর্ত দফতরের এক শীর্ষ কর্তা জানাচ্ছেন, পিপিপি মডেলে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে ছ’লেন করার জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে রাজ্যের। ভারতমালা প্রকল্পের অধীনে কেন্দ্রীয় সরকারেরই এই রাস্তা তৈরির কথা ছিল। কিন্তু এখন জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা রাজ্য সরকারকে দিতে হবে বলে সম্মতিপত্র চাইছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। তাই এখন বিষয়টি খতিয়ে দেখে তার পরে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেবে বলে পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
তবে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অব ইন্ডিয়ার এক পদস্থ কর্তা জানান, কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রকের তৈরি নয়া নীতি অনুযায়ী, বন্দরের সঙ্গে যুক্ত কোনও সড়ক তৈরি করতে হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকেই জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ অর্থ দিতে হবে। সেই কারণেই রাজ্য সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত সম্মতিপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।
সাঁতরাগাছি থেকে মুম্বই রোড পর্যন্ত দু’লেনের রাস্তা হওয়ায় কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে তীব্র যানজট প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা। কলকাতা বন্দরের সঙ্গেও এই রাস্তার সংযোগ রয়েছে। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, প্রতিদিন ব্যস্ত সময়ে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে ১ লক্ষ ২৫ হাজার গাড়ি চলাচল করে। ডায়মন্ড হারবার পর্যন্ত ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক গিয়েছে এই কোনা এক্সপ্রেসওয়ের উপর দিয়েই। সাঁতরাগাছি রেল স্টেশনকে আন্তর্জাতিক মানের করে তৈরি করার সঙ্গে সঙ্গে তাকে ওই এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত করার জন্যেও নতুন নকশা তৈরি হয়েছে।