আনুষ্ঠানিক: কলমের উদ্বোধন করছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র
পথচলা শুরু করল পাড়া ব্লকের কন্যাশ্রী ও স্বনির্ভর দলের মহিলা সদস্যদের তৈরি করা ‘সিড পেন’ বা বীজ কলম। সোমবার সল্টলেকের রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের যুগ্ম প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স হলে ওই কলমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ছিলেন একশো দিনের কাজের প্রকল্পের রাজ্যের কমিশনার দিব্যেন্দু সরকার, এসডিও (রঘুনাথপুর) আকাঙ্খা ভাস্কর প্রমুখ। এ দিনই উত্তর কলকাতার নির্বাচন দফতর তিন হাজার কলম কিনেছে পাড়া ব্লকের ওই মহিলাদের থেকে। প্রতিটি কলমের দাম মিলেছে পাঁচ টাকা করে। দিব্যেন্দুবাবু বলেন, ‘‘পাড়া ব্লকের কন্যাশ্রী ও স্বনির্ভর দলের মহিলারা যাতে আরও বেশি কলম তৈরি করতে পারেন সেই বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আপাতত বাজার ধরে দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা।”
কেরলের বাসিন্দা লক্ষ্মীমেনম ওই ধরনের কলম তৈরি করেন। সেটা দেখার পরেই পুরুলিয়ার শম্পা রক্ষিত পরীক্ষামূলক ভাবে কলম তৈরি করেছিলেন। প্রদর্শনীর জন্য রেখেছিলেন পুরুলিয়া শহরের গ্রামীণ হাটের দোকানে। জাতীয় লাইভলিহুড মিশনের পাড়া ব্লকের প্রোজেক্ট ম্যানেজার মৌমিতা মাহাতো সেই কলম দেখার পরে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেন। কন্যাশ্রী কিশোরী ও স্বনির্ভর দলের মহিলাদের নিয়ে কলম তৈরি শুরু হয়। প্রশিক্ষণ দেন শম্পাদেবী নিজে।
খুব সহজেই পরিবেশ বান্ধব এই কলম তৈরি করতে শিখেছেন মহিলা ও কন্যাশ্রীরা। বাজার থেকে রিফিল কিনে এনে খবরের কাগজ ও রঙিন কাগজ জড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। রিফিলের শেষে রাখা থাকছে ফুল বা ফলের বীজ। ব্যবহারের পরে ফেলে দিলে গজিয়ে যাবে গাছ, যত্নও লাগবে না।
প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রকল্পটির কথা শোনার পরে বিষয়টি নিয়ে আগ্রহী হন এসডিও (রঘুনাথপুর) আকাঙ্খা ভাস্কর। তাঁর উদ্যোগে ইতিমধ্যেই কয়েক হাজার কলম তৈরি করে ফেলেছেন কন্যাশ্রী ও স্বনির্ভর দলের মহিলারা। জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায় বীজ কলমের বিষয়টি জানিয়েছিলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। সেই প্রেক্ষিতেই এ দিন কলম ও দু’জন কন্যাশ্রীকে নিয়ে রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নন দফতরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছে গিয়েছিলেন যান এসডিও।
আপাতত পাড়া ব্লকের এই প্রকল্পটিকেই শক্ত ভিতের উপরে দাঁড় করাতে চাইছে রাজ্য গ্রামোন্নয়ন দফতর। একশো দিনের কাজ -সহ আরও কয়েকটি প্রকল্প মিলিয়ে কলম তৈরি চলছে। দিব্যেন্দুবাবু জানান, একশো দিনের কাজের প্রকল্প থেকে পাড়া ব্লকে ক্লাস্টার প্রোজেক্টের ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। বীজ সরবরাহ করা হবে একশো দিনের প্রকল্প থেকেই। আপাতত প্রশাসনই ক্রেতার ভূমিকা পালন করবে। রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর ও অন্য কয়েকটি দফতরের কর্মশালা আর প্রশিক্ষণের কাজে যাতে কলমগুলি ব্যবহার করা হয় সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।