ফের তারকেশ্বরে হয়রানি মহিলাদের

দিন কয়েক আগেই ভিড়ের চাপে দেওঘরে শিবের মাথায় জল ঢালতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়। এই শ্রাবণেই হরিপালে তারকেশ্বরগামী মহিলা ভক্তদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল কিছু মদ্যপের বিরুদ্ধে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৫ ০৩:৩৯
Share:

পুরুষদের সঙ্গে একই লাইনে মহিলা ভক্তরা। সোমবার তারকেশ্বরে। ছবি: দীপঙ্কর দে

দিন কয়েক আগেই ভিড়ের চাপে দেওঘরে শিবের মাথায় জল ঢালতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়। এই শ্রাবণেই হরিপালে তারকেশ্বরগামী মহিলা ভক্তদের শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল কিছু মদ্যপের বিরুদ্ধে। তার পরেও পুলিশ-প্রশাসনের টনক নড়েনি। সোমবার সকালে মন্দির চত্বরে গিয়ে দেখা গেল, মহিলা ভক্তদের জন্য আলাদা কোনও লাইন নেই। পুরুষদের সঙ্গেই ঠেলাঠেলি করে এগিয়ে যেতে গিয়ে হয়রান হচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

কেবল শিবের মাথায় জল ঢালার সময়টুকুই নয়। বাঁক-কাঁধে পায়ে হেঁটে আসাও নিরাপদ ছিল না তাঁদের কাছে। অন্ধকার রাস্তা, মাতালদের দাপট, শিথিল পুলিশি পাহারা, সব মিলিয়ে স্রেফ দৈবই ভরসা ছিল, জানালেন মহিলা ভক্তরা।

পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, শ্রাবণের সপ্তাহান্তগুলিতে তারকেশ্বরে কয়েক লক্ষ মানুষের সমাগম হয়। ভিড় নিয়ন্ত্রণ এবং মহিলাদের নিরাপত্তা, দুটোই প্রশ্নের মুখে পড়ে। এ নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠলে হরিপালের বিধায়ক, অধুনা মন্ত্রী বেচারাম মান্না বছর দুয়েক আগে পুণ্যার্থীদের জন্য আলো বসানোর ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন পঞ্চায়েতগুলিকে।

Advertisement

বছর ঘুরতে দেখা যাচ্ছে, বৈদ্যবাটি পুর এলাকা ছাড়ার পর থেকে সিঙ্গুর, নালিকুল, হরিপাল, লোকনাথ হয়ে তারকেশ্বর যাওয়ার অন্তত ২৫ কিলোমিটার পথ বাতিহীন। অস্থায়ী দোকানপাটের টিমটিমে আলোই মহিলাদের ভরসা। সে সব পথে না থাকে উর্দিধারী পুলিশের টহলদারি, না সিভিক ভলান্টিয়ার। রাত বাড়লে ট্রাফিক পুলিশেরও দেখা মেলে না।

এ বারে বন্যায় রাস্তায় জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় চাঁপাডাঙা হয়ে তারকেশ্বরে ঢোকার পথ বন্ধ ছিল। ফলে বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর রোডই ভরসা ছিল। এক দিকে কলকাতামুখী ট্রাক, তার পাশেই তারকেশ্বরমুখী যানবাহন, আর তার ধার দিয়ে লাইন করে হেঁটে যেতে হয়েছে পুণ্যার্থীদের। অভিযোগ, পথচলতি এক-আধটা পুলিশ সহায়তা শিবির চোখে পড়লেও পুলিশকর্মীরা শিবিরের মধ্যেই ঝিমিয়েছেন।

রবিবার বিকেল থেকেই তারকেশ্বরে ভিড় উপচে পড়েছে। বৈদ্যবাটি-তারকেশ্বর ১২ নম্বর রুট ধরে মন্দিরের দিকে যাওয়ার রাস্তায় ভিড়ের চাপে পা ফেলার জায়গা ছিল না। অনেক মহিলাকেই দেখা গেল ভিড়ের চাপে কাতর হয়ে পড়েছেন।

জল ঢেলে বেরনোর পরে অনেক মহিলা বললেন, ‘‘এ ভাবে ছেলেদের ভিড় ঠেলে বাবার মাথায় জল দিতে খুব অস্বস্তি হয়। কিছুই করার নেই।’’ এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তারকেশ্বর এস্টেটের ম্যানেজার নেপাল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা লাইন হয়। আর একটা স্পেশাল লাইন থাকে মহিলাদের।’’

শ্রাবণের শেষ সোমবার অবশ্য স্পেশাল কিংবা সাধারণ, কোনও লাইনই চোখে পড়েনি মন্দিরে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement