উপাচার্যের নেতৃত্বে মেলা তুলতে অভিযান চলছে। —নিজস্ব চিত্র
পৌষমেলা তুলতে গিয়ে লুটপাট, দোকানদারদের হেনস্থার অভিযোগ উঠল বিশ্বভারতীতে। উপাচার্যের নেতৃত্বেই ‘অভিযান’ চলে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের। শান্তিনিকেতন থানায় দু’টি পৃথক অভিযোগ দায়ের হয়েছে বিশ্বভারতীর কর্মসচিব, জনসংযোগ আধিকারিক-সহ অন্যদের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে আবার শ্লীলতাহানির অভিযোগও রয়েছে। তাতে অভিযুক্ত হিসেবে উপাচার্যের নামও রয়েছে। বিশ্বভারতীর তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, ওই মামলা ‘সর্বৈব মিথ্যা’। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফে অভিযোগ, সমস্ত নিয়ম নীতি মেনে মেলা করতে চাইলেও কিছু ‘দালাল’ জলঘোলা করছে। সুষ্ঠু ভাবে মেলা চালাতে তাঁরা বিভিন্ন ভাবে বাধা দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ। এমন ভাবে চললে ভবিষ্যতে মেলা চালিয়ে যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়বে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
পরিবেশ আদালতের নির্দেশে এ বার পৌষমেলা ছিল চার দিনের। ২৪ থেকে আর ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী এই মেলা হওয়ার কথা ছিল। এর পর দু’দিনের মধ্যে মাঠ ফাঁকা করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। ২৮ ডিসেম্বর বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে মাঠে নেমে ব্যবসায়ীদের উঠে যেতে বলেছিলেন উপাচার্য। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় রবিবার সশরীরে ময়দানে নামেন উপচার্য-সহ বিশ্বভারতীর আধিকারিকরা। মেলা তুলতে পাঠভবন-সহ এনসিসি-র পড়ুয়াদের মাঠে নামানো হয়। ছিলেন নিরাপত্তারক্ষী, প্রাক্তন সেনাকর্মীরাও। অভিযোগ সেই সময়ই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন উপাচার্য ও আধিকারিকরা। অভিযোগ ওঠে শ্লীলতাহানিরও।
পৌষমেলায় আসা বোলপুর শহরের মিস্ত্রিপাড়ার বাসিন্দা এক মহিলা শান্তিনিকেতন থানায় লিখিত অভিযোগে দাবি করেছেন, মেলার মাঠ থেকে ফেরার সময় ১০-১২ জন তাঁর হাত ধরে টানাটানি করেন। তার মধ্যে উপাচার্যও ছিলেন বলে ওই মহিলার দাবি। এ ছাড়াও অভিযুক্তদের তালিকায় কর্মসচিব, জনসংযোগ আধিকারিক-সহ আরও কয়েক জন রয়েছেন।
অন্য দিকে বিশ্বভারতীর উপাচার্য-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে মানিক শেখ নামে এক ব্যবসায়ী শান্তিনিকেতন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন৷ তাঁর অভিযোগ, দু’বস্তা ভর্তি জিনিসপত্র বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ নিয়ে গিয়েছেন। বাধা দিলে তাঁকে গালিগালাজ করে চড়-থাপ্পড় মারা হয়৷ কি কি নেওয়া হয়েছে, তার কোনও তালিকাও তাঁকে দেওয়া হয়নি। ফলে ওই জিনিসপত্র কী ভাবে ফেরত পাবেন, বা আদৌ পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে মানিক শেখ।