ডেঙ্গি রোগীদের মশারির ভিতরে রেখে চলছে চিকিৎসা। —ফাইল চিত্র।
ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল দক্ষিণ দমদমের এক বাসিন্দার। এই নিয়ে পর পর বেশ কয়েকটি ডেঙ্গিতে মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এল দক্ষিণ দমদম থেকে। শনিবার গভীর রাতে আরজি কর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ২০ বছরের তরুণীর। পর পর ডেঙ্গিতে মৃত্যু উদ্বেগ বাড়িয়েছে দক্ষিণ দমদমে।
মৃত তরুণীর নাম সমাপ্তি মল্লিক। তিনি দক্ষিণ দমদম পুরসভার মতিঝিল এলাকার এমএম ঘোষ রোডের বাসিন্দা ছিলেন। জ্বর নিয়ে তাঁকে শনিবার রাত ১০টার পর আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। চিকিৎসকেরা বেশি সময় পাননি। ওই দিনই গভীর রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। তরুণীর মৃত্যুর সংশাপত্রে ডেঙ্গির উল্লেখ রয়েছে।
তরুণীর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, তিন দিন ধরে তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। সঙ্গে ছিল বুকে ব্যথা। প্রথমে আরজি করে নিয়ে যাওয়া হলেও ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে নাগেরবাজারের বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। তরুণীর হাত-পা ঠান্ডা হয়ে এসেছিল। শ্বাসকষ্ট ছিল। শনিবার রাতে আবার আরজি করে নিয়ে আসা হলে তাঁর মৃত্যু হয়।
যত দিন যাচ্ছে, তত উদ্বেগ বাড়াচ্ছে রাজ্যের ডেঙ্গি পরিস্থিতি। সরকার ডেঙ্গি নিয়ে কোনও পরিসংখ্যান প্রকাশ করেনি। বেসরকারি সূত্রে খবর, ডেঙ্গিতে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৫০-এর বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন। কলকাতার পাশাপাশি জেলাতেও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। দিনে অন্তত ২৫০ থেকে ৩০০ জন করে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
গত কয়েক দিন ধরে নিম্নচাপের কারণে রাজ্য জুড়ে বৃষ্টির দাপট বেড়েছে। সেই সঙ্গে ডেঙ্গি বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। কারণ, বর্ষায় রাস্তাঘাটের খানাখন্দে জল জমে থাকে। সেই জমা জলই ডেঙ্গিবাহী মশার আঁতুড়ঘর। বৃষ্টির কারণে ডেঙ্গি আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছে প্রশাসন।
এই পরিস্থিতিতে সরকারও চুপ করে বসে নেই। ইতিমধ্যে জেলায় জেলায় বেশ কিছু এলাকাকে ‘ডেঙ্গি হটস্পট’ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। শনিবার সব জেলা এবং পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে ডেঙ্গি নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী দু’সপ্তাহ সর্ব স্তরের প্রশাসনিক কর্তাদের ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। পুরসভা এবং পঞ্চায়েতগুলিকে ডেঙ্গি মোকাবিলার কাজে বাড়তি জোর দিতে বলা হয়েছে।