ফাইল চিত্র।
অভাবের তাড়নায় নিজের সদ্যোজাত কন্যাসন্তানকে বিক্রির অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে। নগদ ৫ হাজার টাকায় মেয়েকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন স্বামীহারা ওই মহিলা। খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। মায়ের পাশাপাশি যিনি ওই কন্যাসন্তান কিনেছিলেন, তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার ছিল কন্যাশ্রী দিবস। সেই দিনেই এমন ঘটনায় তোলপাড় শহর মেদিনীপুর। ওই সদ্যোজাতকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসার পরে শিশুকল্যাণ সমিতির মাধ্যমে তাকে হোমে পাঠানো হবে। জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সন্দীপ দাস বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ জেলা শিশুকল্যাণ সমিতির সদস্য অনিন্দিতা শূরের দাবি, ‘‘ভদ্রমহিলার চার সন্তান। আমরা জানতে পারছি, কন্যাসন্তানকে উনি একটি পরিবারে দিয়েছিলেন দেখাশোনা করার জন্য।’’
ধৃত মা ভূতনি ভুঁইয়ার বাড়ি আবাসে। মেয়ে বিক্রির কথা অস্বীকার করছেন না তিনি। ভূতনির কথায়, ‘‘আমি নোংরা-আবর্জনা কুড়োই। এর আগে তিনটে ছেলে রয়েছে। মেয়েটাকে মানুষ করতে পারব না। তাই ৫ হাজার টাকায় দিয়ে দিই।’’ শেখ কুরবান নামে সিপাইবাজারের এক বাসিন্দা ওই কন্যাসন্তান কিনেছিলেন। পুলিশের কাছে কুরবানের দাবি, তিনি এক বন্ধুর জন্য কিনেছিলেন ওই সদ্যোজাতকে। ভূতনির তিন পুত্রসন্তানকেও মেদিনীপুরের হোমে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার ভূমিষ্ঠ হয়েছে ওই কন্যাসন্তান। ভূতনি জানিয়েছেন, মাস পাঁচেক তাঁর স্বামী যখন মারা যান, তখন তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। শ্বশুরবাড়ির লোক এই কন্যাসন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়েও প্রশ্ন তোলে। পুলিশের কাছে ধৃত মায়ের দাবি, ‘‘মেয়েটা যাতে ভাল ভাবে মানুষ হয়, সে জন্যই বিক্রি করেছিলাম।’’ মেদিনীপুরের সমাজকর্মী রোশেনারা খান বলছিলেন, ‘‘নানা রকম প্রকল্প করে চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও ছেলে-মেয়েকে সমান চোখে দেখার মানসিকতাটা সর্বত্র গড়ে উঠল না!’’