বোরহান শেখ। লালবাজারে। নিজস্ব চিত্র
কচি কলাপাতা রঙের ফুলহাতা জামা, নীল রঙের লুঙ্গি, পরিষ্কার করে দাড়ি-গোঁফ কামানো ভাবলেশহীন মুখ। শুক্রবার বিকেল সওয়া তিনটে। কাঠগড়ায় দাঁড়ানো ওই যুবককে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) তাদের হেফাজতে নিতে আবেদন করায় বিচারক কুন্দনকুমার কুমাইয়ের প্রশ্ন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ হয়ে থাকলে এনআইএ এই আবেদন করছে কেন?
অভিযুক্তের নাম বোরহান শেখ। বর্ধমানের শিমুলিয়া গ্রামের বোরহানকে ছ’মাসের চেষ্টায় দু’বার ফস্কে শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) গ্রেফতার করেছে। আদালতে এ দিন এনআইএ-র কৌঁসুলি শ্যামল ঘোষ ও দেবাশিস মল্লিক চৌধুরী জানান, খাগড়াগড় মামলার আরও তথ্য পেতে অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করাটা দরকার। বিচারক বোরহানকে ১০ দিনের জন্য এনআইএ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
গোয়েন্দারা জানান, স্থানীয় এক সমাজবিরোধীর সহায়তায় মুর্শিদাবাদের রানিতলার পূর্ব নাজিরচকে বোরহান গত দেড় বছর কাঠের মিস্ত্রি সেজে লুকিয়েছিল। শিমুলিয়ায় বোরহানের কাঠের আসবাবপত্রের একটি দোকান ছিল। বোরহানের কয়েক জন আত্মীয়ের উপর এসটিএফ নজর রাখছিল। সেই পথেই সাফল্য এসেছে।
আরও পড়ুন: প্রদ্যুম্ন হত্যা রহস্য ভেদ করার ভার পেল সিবিআই
এনআইএ সূত্রের খবর, বর্ধমানের শিমুলিয়া মাদ্রাসাকে পরবর্তী সময়ে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)-র জঙ্গি প্রশিক্ষণের ঘাঁটিতে পরিণত করতে ওই সংগঠন থেকে বোরহান শেখ কত টাকা পেয়েছিল, সেটা জানা জরুরি। পরে শিমুলিয়া মাদ্রাসার কাছে জেহাদি প্রশিক্ষণকেন্দ্র হিসেবে আরও একটি মাদ্রাসা তৈরিতে মহম্মদ বদিউজ্জামান নামে মালদহের এক জন বোরহানকে সাহায্য করেছিল। সেই ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে চান গোয়েন্দারা। বছর তিনেক পালিয়ে থাকার সময়েও বোরহান একাধিক বার মালদহে গিয়েছে।
এনআইএ-র দাবি, খাগড়াগড় কাণ্ডে অভিযুক্ত যারা পলাতক, বোরহান তাদের হদিস দিতে পারে। তাদের তিন জন বাংলাদেশের নাগরিক। খাগড়াগড়ের ঘটনার পর বোরহান বহু বার বাংলাদেশে গিয়েছে। সম্প্রতি এ দেশে জেএমবি-র কিছু সাংগঠনিক কাজকর্মের দায়িত্বও তাকে দেওয়া হয়েছে।