পদযাত্রায় লোক টেনে সিপিএমের নজর ব্রিগেডে

মোট ১১৭টি বাম গণসংগঠনের যৌথ মঞ্চ বিপিএমও যা পারেনি, তা-ই করে দেখাল শুধু সিপিএমের দু’টি শাখা সংগঠন কৃষক সভা ও ক্ষেতমজুর ইউনিয়ন! সিঙ্গুর থেকে রাজভবন অভিযানে ভিড় হল বিপুল। পদযাত্রা শেষে উপচে পড়ল কলকাতায় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের সমাবেশও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৩১
Share:

n অদম্য: শিল্পের দাবিতে বুধবার সিঙ্গুর থেকে শুরু হয়েছিল বামেদের কৃষক মিছিল। বৃহস্পতিবার এল ধর্মতলায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

মোট ১১৭টি বাম গণসংগঠনের যৌথ মঞ্চ বিপিএমও যা পারেনি, তা-ই করে দেখাল শুধু সিপিএমের দু’টি শাখা সংগঠন কৃষক সভা ও ক্ষেতমজুর ইউনিয়ন! সিঙ্গুর থেকে রাজভবন অভিযানে ভিড় হল বিপুল। পদযাত্রা শেষে উপচে পড়ল কলকাতায় রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের সমাবেশও। ভিড়ের বহরে উৎসাহিত সিপিএম নেতৃত্ব তৃণমূল এবং বিজেপিকে টক্কর দেওয়ার মতো ব্রিগে়ড জমায়েতের ডাক দিয়ে দিলেন।

Advertisement

জেলায় জেলায় পদযাত্রা সেরে অক্টোবরের গোড়ায় শহিদ মিনার ময়দানে সমাবেশ করেছিল বিপিএমও। কিন্তু সেই সমাবেশ একেবারেই লোক টানতে পারেনি। পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে বামেদের নানা স্থানীয় কর্মসূচিতে সাড়া পাওয়া গেলেও কেন্দ্রীয় ভাবে তেমন দাগ কাটার মতো কিছু হচ্ছিল না। সেই প্রেক্ষিতে সিঙ্গুর থেকে রাজভবন পদযাত্রায় সিপিএমের কৃষক সভা ও ক্ষেতমজুর ইউনিয়ন লাল ঝান্ডা হাতে যথেষ্টই লোক আনতে পেরেছে। সিঙ্গুর থেকে বুধবার শুরু হয়ে সন্ধ্যায় পদযাত্রা থেমেছিল ডানকুনিতে। বালির বিভিন্ন বাড়িতে রাত কাটিয়েছেন পদযাত্রীদের অনেকে, বাকিরা ফিরে গিয়েছিলেন নিজেদের এলাকায়। বালিঘাট থেকে বৃহস্পতিবার সকালে আবার হাঁটা শুরু হওয়ার পরে বালি, বেলুড় ও হাওড়া স্টেশন থেকে কিছু জেলার সিপিএম কর্মী-সমর্থকেরা পদযাত্রায় যোগ দেন। হাওড়া সেতু পেরিয়ে দুপুরে শহরে ঢোকে ওই পদযাত্রা। আবার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও দুই ২৪ পরগনার দলীয় সমর্থকেরা মিছিল করে আসেন রানি রাসমণিতে। কর্মী-সমর্থকদের উৎসাহ দেখেই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, কৃষক সভার অমল হালদার, ক্ষেতমজুর সংগঠনের অমিয় পাত্রেরা ডাক দিয়েছেন, কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসক দলকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়া যাবে না!

রাজ্যে শিল্পায়নের দাবি, সকলের জন্য কাজ, ফসলের ন্যায্য দাম, কৃষকের জন্য ক্ষতিপূরণ— এই রকম নানা দাবি নিয়েই ছিল পদযাত্রা। কেন্দ্রের বিজেপি ও রাজ্যের তৃণমূল সরকারকে কড়া আক্রমণের পাশাপাশিই সূর্যবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের ব্রিগে়ড সমাবেশ হবে ৩ ফেব্রুয়ারি। তার আগে তৃণমূল ব্রিগে়ডে সভা করবে, বিজেপিও সম্ভবত করবে। আমাদের এই আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে, ওই দুই দলের চেয়ে বেশি মানুষকে সে দিন ব্রিগে়ডে টেনে আনতে হবে।’’

Advertisement

তবে মিছিল-সমাবেশে লোক হলেও তৃণমূল স্তরে সংগঠন ছাড়া ভোটের লড়াই যে কঠিন, তা বিলক্ষণ জানে আলিমুদ্দিন। সূর্যবাবু তাই বলেছেন, ‘‘এই লড়াই নিয়ে যেতে হবে বাড়ি, পাড়া, গ্রামে, এলাকায়। যাতে দাবি আদায়ে আপনাদের রাজভবন বা নবান্ন অভিযান করতে না হয়, যাতে নবান্নই পৌঁছে যায় আপনাদের কাছে।’’

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘সিপিএম শেষ হয়ে গিয়েছে। তার পরেও তৃণমূল তাদের অক্সিজেন দিচ্ছে বলে তারা এ সব করছে!’’ যার জবাবে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘বিজেপি নেতারা বুঝতে পারছেন, এ রাজ্যে আগামী নির্বাচনের আগে তাঁদেরই অক্সিজেন ফুরিয়ে আসছে! তাই অবান্তর কথা বলছেন!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement