বাড়ির উঠোনে ঢুকে পড়েছে ছাঁটমেচি নদীর জল। শিলিগুড়ির কাছে বিন্নাবাড়ির ভজনপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
চলছে অনবরত বৃষ্টি। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে নদীর জল। ফলে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলার কিছু জায়গায় তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। অথচ, বৃষ্টি হলে যে এমন হওয়া অসম্ভব নয়, সবার জানা। তবু এ সমস্যা এড়াতে ব্যবস্থা হয় না কেন, প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা।
ময়নাগুড়ি, দোমহনি, জলপাইগুড়ি লাগোয়া কিছু এলাকায় শুক্রবার থেকে তিস্তার জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়েছে। তিস্তা নদীতে এ দিনও ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি ছিল। তিস্তা ব্যারাজ থেকে ক্রমাগত অতিরিক্ত জল ছাড়া হচ্ছে।পাহাড়ে বৃষ্টি না থামলে আজ, শনিবার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা।
জলঢাকা নদীর জলস্তরও ধূপগুড়ি লাগোয়া জাতীয় সড়কের কাছে বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়েছে। হাতিনালার জল উপচে বানারহাটে বন্যা পরিস্থিতি হয়েছে। প্রশাসনের দাবি, হাতিনালা সংস্কারের কাজ হয়েছে। অতিরিক্ত বৃষ্টিতেই এই সমস্যা। ভুটানে বৃষ্টির খবর ঠিকঠাক না মেলাও সমস্যার কারণ বলে দাবি।
বাঁধ সংস্কার নিয়ে এ বছর আগে থেকেই সেচ দফতরের তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, বরাদ্দে টান থাকায় বন্যা মোকাবিলার কাজ ঠিকঠাক হয়নি বলে দাবি। সে সঙ্গে নদীখাত থেকে অপরিকল্পিত ভাবে বালি-পাথর তুলে নেওয়ায়, বেশ কিছু ক্ষেত্রে নদী পথ বদলে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার তোর্সা নদীর জল বেড়ে কোচবিহার জেলার বিভিন্ন এলাকায় জল ঢুকে কয়েকশো পরিবার জলবন্দি হয়ে পড়ে। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে বেশ কিছু বাঁধ তৈরি হয়েছে। বাকি জায়গা নিয়ে পরিকল্পনা চলছে।’’
আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ব্লকের মেচপাড়া চা বাগানে প্রায় ১০ হেক্টর জমি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে বলে এবং চা গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি। ‘টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া’র উত্তরবঙ্গ শাখার সম্পাদক সুমিত ঘোষ বলেন, ‘‘লাগাতার বৃষ্টিতে ক্ষতি হচ্ছে চা গাছের। অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে, এটা ভেবে দেখা দরকার।’’
সেচ দফতরের আলিপুরদুয়ার জেলার মুখ্য নির্বাহী বাস্তুকার অমরেশকুমার সিংহের দাবি, “অতিবৃষ্টি, বন্যা পরিস্থিতিতে যাতে মানুষের ক্ষতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে বছরভর কাজ চলে। ক্ষতিও অনেকটাই আটকানো সম্ভব হয়।’’