Mamata Banerjee

কয়েকটা ভুল নিয়ে ‘খেলে বেড়াচ্ছে’, মমতা সরব নিয়োগ-কাণ্ডে

‘উৎকর্ষ বাংলা’র আওতায় সম্প্রতি চাকরি-প্রার্থীদের যে নিয়োগের চিঠি দেওয়া হয়েছিল, পরে দেখা যায় তার মধ্যে ছিল প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষানবিশির প্রস্তাবও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৩৭
Share:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

নিয়োগপত্র-বিতর্কে এ বার মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পে রাজ্য সরকার চাকরি দেয়নি, বরং চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন, ৩০ হাজার নিয়োগের মধ্যে মাত্র ১০৭টি ‘ভুল’ বেরোনোয় এত হইচই কেন? যে ক্ষেত্রে ভুল বেরিয়েছে, সেখানে সরকার উপযুক্ত পদক্ষেপ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

‘উৎকর্ষ বাংলা’র আওতায় সম্প্রতি চাকরি-প্রার্থীদের যে নিয়োগের চিঠি দেওয়া হয়েছিল, পরে দেখা যায় তার মধ্যে ছিল প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষানবিশির প্রস্তাবও। এমনকি, তার মধ্যে সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করে বেশ কিছু প্রার্থী জানতে পারেন, ওই সংস্থার নামে জারি হওয়া চিঠিও ‘ভুয়ো’। এই নিয়েই সরব বিরোধীরা। এই প্রেক্ষিতেই মঙ্গলবার দক্ষিণ কলকাতার একটি পুজো উদ্বোধন করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘৩০ হাজারের মধ্যে মাত্র ১০৭টা গন্ডগোল হয়েছে। তা-ই নিয়ে খেলে বেড়াচ্ছে! নিজেদের সরকার যে কত কেলেঙ্কারি করছে, তা আর বলার কথা নয়!’’ তিনি জানান, যাঁদের ক্ষেত্রে গন্ডগোল হয়েছে, তাঁদের এক এক জনের কাছে দু-তিনটি সংস্থার ‘অফার লেটার’ ছিল। কাজ করতে গেলে ভুল হয় এবং ভুল করাও একটা অধিকার বলে এ দিন ফের মন্তব্য করেছেন তিনি। এই প্রকল্পে সরকার যে নিজে কোনও চাকরি দিচ্ছিল না, নিয়োগ সংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছিল, তা-ও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

ত্রিধারা সম্মিলনীর ওই অনুষ্ঠান থেকেই এ দিন ৪০০টি পুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন মুখ্য সচিবও। তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট যে সংস্থার মাধ্যমে ওই ‘ভুয়ো’ প্রস্তাব এসেছিল, তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে বিশেষ ভাবে নজর রাখতে বলা হয়েছে সিআইআই-কে। সরকারও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রাখছে।

Advertisement

বিরোধীরা অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে, নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম এবং মেদিনীপুরে ‘উৎকর্ষ বাংলা’র দুই অনুষ্ঠানেই স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। চাকরির নিয়োগ-পত্র দেওয়ার ঘোষণাও করেছিলেন। এখন অন্য সংস্থাকে দোষী করে সরকার দায় এড়িয়ে যেতে পারে কী করে? সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য, ‘‘এখন তালগোল পাকানো কথা বলা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব সবাই বেসরকারি চাকরির কৃতিত্ব নিতে চেয়েছিলেন। তার পরে দেখা গেল সেগুলো প্রশিক্ষণ, ইন্টার্নশিপের ব্যাপার। তাতেও আবার ভুয়ো বেরোল! কৃতিত্ব যখন নিতে গিয়েছিলেন, কেলেঙ্কারির দায়ও নিতে হবে। এখন সিআইআই বা অমুক এজেন্সির নাম করে পার পাওয়া যাবে না! জালিয়াতিতে সরকার যুক্ত, ধরা পড়ে গিয়েছে।’’ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও দাবি, জাল নিয়োগ-পত্রের ঘটনায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর ভাবমূর্তিতে ধাক্কা লেগেছে বলে মুখ্যসচিবকে দিয়ে বিবৃতি দেওয়ানো হচ্ছে। বেসরকারি সংস্থার বিষয়ে সরকার ঢুকতে গিয়েছিল কেন, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement