রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। —ফাইল ছবি।
নতুন করে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে গণপিটুনির ঘটনা ঘটতে শুরু করার পরেই পাঁচ বছরের পুরনো একটি বিল ফের আলোচনায় চলে এসেছে। রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া গণপিটুনিতে মৃত্যুদণ্ডের সাজার বিলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সই না করায় তা এখনও আইনে পরিণত করা যায়নি বলে জানিয়েছেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার এক্স হ্যান্ডল পোস্টে প্রশ্নোত্তরের আকারে সেই অভিযোগের জবাব দিলেন রাজ্যপাল বোস।
রাজ্যপাল জানিয়েছেন, ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল (প্রিভেনশন অব লিঞ্চিং) বিল, ২০১৯’ রাজ্য বিধানসভায় পাশ হয়েছিল ওই বছরের ৩০ অগস্ট। ৪ সেপ্টেম্বর অনুমোদনের জন্য রাজ্য সরকার সেটি রাজভবনে পাঠিয়েছিল। রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘‘বিলটির বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে কিছু ব্যাখ্যা চেয়ে পাঠিয়েছিলাম আমি। সেই ব্যাখ্যা এখনও মেলেনি। ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর থেকে সেই ব্যাখ্যা বকেয়া পড়ে রয়েছে।’’
তৎকালীন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী পক্ষ কংগ্রেস এবং বামেরা বিলের কিছু বিষয় সংশোধনের দাবি তুলেছিলেন বলেও জানান রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, ‘‘বিলের খসড়ায় সর্বোচ্চ সাজা হিসাবে মৃত্যুদণ্ডের কথা ছিল না। কিন্তু বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে তা ছিল! এটা তো নিছক মুদ্রণ প্রমাদ হতে পারে না।’’ ২০২২ সালে রাজ্য বিধানসভায় বিতর্ক পর্বে রাজভবনে পড়ে থাকা ২২টি বিলের তালিকাতেও গণপিটুনি সংক্রান্ত বিলটি ছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
কখনও ‘চোর’, কখনও ‘ছেলেধরা’ সন্দেহে বা কখনও ‘ডাইনি’ অপবাদে গণপিটুনির ঘটনা এ রাজ্যে প্রায়শই শোনা যায়। সে সব রুখতে ২০১৯ সালে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বিল এনেছিলেন। ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল (প্রিভেনশন অব লিঞ্চিং) বিল, ২০১৯’ পাশ হয়ে গিয়েছিল সেই বছরের অগস্ট মাসেই। সেই বিলে গণপিটুনিতে মৃত্যু হলে অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলেন মমতা। কিন্তু পাঁচ বছর কেটে গেলেও সে বিল আইনে পরিণত হয়নি। আটকে রয়েছে লালফিতের ফাঁসে। প্রসঙ্গত, ১ জুলাই থেকে দেশ জুড়ে যে নয়া ফৌজদারি আইন (দণ্ড সংহিতা) চালু হয়েছে, তাতেও সর্বোচ্চ সাজা হিসাবে মৃত্যুদণ্ডের কথা বলা হয়েছে।