—প্রতীকী ছবি।
রক্ষাকবচের মেয়াদ আরও এক দিন বাড়ল তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। সেই মামলা খারিজ ও রক্ষাকবচের আবেদন করেছেন অভিষেক। প্রসঙ্গত, ইডি ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টেও দাবি করেছে, অভিষেকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে বলেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব
করা হয়েছে।
আজ আদালতে ইডির আইনজীবী এম ভি রাজুর বক্তব্য, ‘‘সমন পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডাকা মানেই তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে, এমন কেন ভাবছেন তিনি? তিনি এত প্রভাবশালী যে জিজ্ঞাসাবাদ করতেও ডাকা যাবে না? তা হলে তো তদন্তই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে! তিনি যদি নির্দোষ হন, তা হলে কেন গ্রেফতারের ভয় পাচ্ছেন? কেন সমন এড়িয়ে যাছেন? আজ অভিযুক্ত নন বলে, কালও যে হবেন না, এমনটা তো নয়।’’
এ দিন আদালতে শুনানি সন্ধ্যা পর্যন্ত গড়ায়। শেষে বিচারপতি ঘোষ জানান, মামলাটি আজ, শুক্রবার আবার তিনি শুনবেন। তত ক্ষণ পর্যন্ত রক্ষাকবচ থাকবে অভিষেকের। অভিষেক এই মুহূর্তে বিদেশে। অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে তাঁর দেশে ফেরার কথা।
নিয়োগ মামলায় ধৃত তৃণমূলের যুব নেতা (বহিষ্কৃত) কুন্তল ঘোষ জেল থেকে লিখিত অভিযোগ করেছিলেন, অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁর উপরে চাপ দিচ্ছেন ইডি ও সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। সেই মামলা কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠলে তিনি অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন তদন্তকারী সংস্থাকে। তার বিরুদ্ধে অভিষেক সুপ্রিম কোর্টে যান। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে মামলা সরিয়ে বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে পাঠানো হলে তিনিও অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। অভিষেক আবার সুপ্রিম কোর্টে যান। সেখান থেকে মামলা ফিরে আসে হাই কোর্টে।
বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মামলা ফিরলে ওই এজলাসে মামলা নিয়ে আপত্তি জানায় ইডি। সেই মামলা প্রধান বিচারপতি টি এস শিবগণনমের কাছে পাঠানো হলে তিনি বিচারপতি ঘোষের এজলাসেই মামলা ফেরত পাঠান।
আদালতে অভিষেকের পক্ষে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানান, গত এক বছর ধরে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত চললেও এর আগে কখনও অভিষেকের নাম উঠে আসেনি। তার পরেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকলে তিনি হাজিরা দিয়েছেন। এই দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ নেই। হঠাৎ সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে তাঁকে ইডির জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে তিনি পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। যথাসময়ে হাজিরাও দিয়েছেন। তাই মামলা থেকে তাঁকে নিষ্কৃতি দেওয়া হোক।
এ প্রসঙ্গে ইডির আইনজীবীর পাল্টা যুক্তি, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে যে আর্থিক লেনদেন হয়েছে তা খতিয়ে দেখার জন্যই অভিষেককে জিজ্ঞসাবাদে ডাকা হয়েছে। অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ। বহু গরিব পরিবারের ছেলে-মেয়েদের থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে। কখন, কী ভাবে তদন্ত হবে, সেটা এজেন্সির হাতেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।