নিয়ম থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতি, বিভিন্ন উন্নয়ন পর্ষদ বা আইসিডিএস প্রকল্পের সরকারি কমিটিতে বিরোধী দলের বিধায়কদের নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করলেন আব্দুল মান্নান। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়ে এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বিরোধী দলনেতা। একই ভাবে বামেদের অভিযোগ, বিরোধীদের হাতে থাকা পুরসভা বা পঞ্চায়েতের তহবিলের ব্যাপারে বৈষম্যমূলক আচরণ করছে রাজ্য সরকার।
মান্নান বুধবার বলেন, ‘‘দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে মমতা বলেছিলেন, গণতন্ত্রের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু এখন দ্বিচারিতা করছেন। কথার সঙ্গে কাজের মিল নেই! বাম ও কংগ্রেসের নির্বাচিত বিধায়কদের সরকারি কমিটিতে নেওয়া হচ্ছে না। কিন্তু তৃণমূলের পরাজিত প্রার্থীকে নেওয়া হচ্ছে!’’ বিধানসভার মিডিয়া সেন্টারে মান্নানের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। বাম কর্মীদের উপরে অত্যাচার বন্ধ করতে তিনিও মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন।
বিরোধী দলনেতার অভিযোগ, জেলা পরিষদ থেকে পুরসভা, পঞ্চায়েত সর্বত্র বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধির সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। তাঁদের কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। মান্নানের বক্তব্য, ‘‘আমরা আবেদন করলাম। মুখ্যমন্ত্রী গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাস করলে ব্যবস্থা নেবেন। না হলে তিনি যে ভাষা বোঝোন, সেই ভাষাতেই জবাব দেব!’’ বামেদের দখলে থাকা বিভিন্ন পুরসভা ও পঞ্চায়েতের নেতৃত্বকে নিয়ে এ দিনই বৈঠক ছিল আলিমুদ্দিনে। পরে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুরও অভিযোগ, ‘‘যে সব পুরসভা ও পঞ্চায়েত বিরোধীদের হাতে আছে, সেখানে অর্থ সাহায্য আটকে দেওয়া হচ্ছে। দখল নেওয়া হচ্ছে।’’
পরিষদীয় মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চিঠির সারবত্তা থাকলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। অতীতে দেখা গিয়েছে, রাজনৈতিক ভাবে বেঁচে থাকার জন্য এই সব চিঠি দেওয়া হয়। দু’দলই তো আন্দোলনের শক্তি হারিয়েছে!’’ বিমানবাবু যদিও বলেছেন, সেপ্টেম্বরে সাধারণ ধর্মঘটের পরে তাঁরা এই নিয়ে আন্দোলনে যেতে পারেন।
শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্যও আর্থিক বঞ্চনার অভিযোগ নিয়ে এ দিন পার্থবাবুর সঙ্গে দেখা করেন। কী ভাবে রাজ্য শিলিগুড়ি পুরসভাকে বঞ্চিত করছে, তা নিয়ে আগেই অশোকবাবু চিঠি দেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। সমাধান না হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান অশোকবাবু। পার্থবাবু তাঁকে বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তিনি কথা বলবেন।