প্রতীকী ছবি
লোকসভা নির্বাচনে যা হওয়ার, হয়ে গিয়েছে। এ বার ভবিষ্যতের কৌশল নিয়ে বিতর্ক বাধল প্রদেশ কংগ্রেসের অন্দরে। বিজেপি না তৃণমূল, এখন কাকে ‘বড় প্রতিপক্ষ’ ধরে লড়াই করা উচিত, বিতর্ক সেই প্রশ্নেই। দলের একাংশের মত, তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের আসন্ন উপনির্বাচনেই নতুন কৌশলের মহড়া হয়ে যাক।
বাম ও কংগ্রেসকে প্রায় গিলে ফেলে রাজ্যে এ বার তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি। তার পরেই বাংলার কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ মনে করছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ঠেকানোই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। তাঁদের মতে, তৃণমূল-বিরোধিতার যাবতীয় ফায়দা এখন গেরুয়া বাক্সে চলে যাচ্ছে। তাই আগে কংগ্রেস যে ভাবে চলছিল, ২৩ মে-র পরে সেই ভাবনায় বদল আনতে হবে। দলের এই অংশই চাইছে, বিধানসভা উপনির্বাচনে রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গে ‘কৌশলগত বোঝাপড়া’র পরীক্ষা সেরে নিক প্রধান বিরোধী দল!
খগড়পুর সদর ও করিমপুরের দুই বিধায়ক দিলীপ ঘোষ ও মহুয়া মৈত্র সাংসদ হয়ে যাওয়ায় ওই দু’টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচন করতে হবে। কালিয়াগঞ্জের কংগ্রেস বিধায়ক প্রমথনাথ রায়ের প্রয়াণে সেখানেও উপনির্বাচন হবে। কংগ্রেসের একাংশের মত, প্রয়াত জ্ঞানসিংহ সোহনপালের (চাচা) স্মৃতিজড়িত খড়গপুর সদরে প্রার্থী না দিয়ে তাদের সমর্থন করুক তৃণমূল। করিমপুর ও কালিয়াগঞ্জ যথাক্রমে তৃণমূল ও কংগ্রেসের হাতে থাকা আসন। ওই দু’টি ক্ষেত্রে যার হাতে যে আসন আছে, সেখানে তাদের প্রার্থীকে সমর্থন করুক অন্য দল। কংগ্রেসের এই অংশের যুক্তি, বিজেপির উত্থান ঠেকানোর জন্যই এমন সূত্র ভাবা যেতে পারে। যা আনুষ্ঠানিক জোট নয়। তবে অবশ্যই কৌশলগত বোঝাপড়া। তৃণমূল শিবিরের একাংশেও এমন সূত্র নিয়ে চর্চা চলছে।
বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বা ওমপ্রকাশ মিশ্রের মতো প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন তৃণমূল-বিরোধিতার সুর ভেবেচিন্তে বাঁধা উচিত। কারণ, বিজেপির সুবিধা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বা প্রচার কমিটির সভাপতি অধীর চৌধুরীরা আবার মনে করছেন, তৃণমূলের প্রতি কংগ্রেস হঠাৎ ‘নরম’ হয়ে গেলে তাতে বরং বিজেপির আরও সুবিধা হবে! তৃণমূলের দল ভাঙানো, মিথ্যা মামলার রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এই লোকসভা ভোটও লড়ে আসা কংগ্রেস তা হলে আগামী বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের সরকারকে পরাস্ত করার ডাক দিতে পারবে না! তার চেয়ে বিজেপি ও তৃণমূলের ‘নোংরা রাজনীতি’র বিরোধিতা করে চলাই ঠিক পন্থা। রাজ্য সিপিএমের মতও একই।
প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘আগামী সপ্তাহেই সম্পাদকমণ্ডলী বা কর্মসমিতির বৈঠক ডেকে গোটা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।’’