বুধবার রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি তৃণমূল নেতারা। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
কলকাতায় বিজেপি অফিসের সামনে গোলমালের পরে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় বাহিনীর বেশ কিছু জওয়ানকে অস্ত্র হাতে ঘুরতে দেখা গিয়েছিল। তাঁদের কয়েক জন ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা রাহুল সিংহের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী। কিন্তু বাকিরা কোথা থেকে এলেন, কেন তাঁদের রাস্তায় নামানো হয়েছিল, কার কাছ থেকেই বা সেই নির্দেশ এসেছিল, তা নিয়ে বুধবার দুপুরে প্রশ্ন তোলে তৃণমূল। নবান্ন সূত্রের খবর, কার্যত একই প্রশ্ন তুলে দিল্লিতে চিঠি পাঠাচ্ছে রাজ্য সরকার। আজ, বৃহস্পতিবার সেই চিঠি দেওয়ার কথা।
ডিসেম্বরের গোড়ায় কলকাতা-সহ রাজ্যের একাধিক স্থানে সেনা নামানো নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে বিতর্ক বেধেছিল নবান্নের। সে বারেও নবান্নের অভিযোগ ছিল, আইন-শৃঙ্খলা দেখার এক্তিয়ার রাজ্যের। তাই তাদের না জানিয়ে রাস্তায় সেনা নামিয়ে অনৈতিক কাজ করেছে কেন্দ্র। পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো হয় যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে নবান্নে রাত জেগে সেনাদের গতিবিধির উপরে নজর রাখেন। পরের দিনই রাজ্যের মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে চিঠি পাঠিয়ে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট করেন।
বিজেপি অফিসের সামনে কেন্দ্রীয় বাহিনী নামা নিয়ে কার্যত একই অবস্থান রাজ্য সরকারের। নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাহুল সিংহ ‘ওয়াই’ ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পান। তাতে তিন জনের বেশি নিরাপত্তারক্ষী পাওয়ার কথা নয়। তা হলে মঙ্গলবার বিজেপি অফিসের সামনে কী ভাবে, কার নির্দেশে অতিরিক্ত বাহিনী পৌঁছল? এটাই কেন্দ্রের কাছে জানতে চেয়েছি।’’ এ দিন রাজভবন থেকে বেরিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্রীয় বাহিনী ডেকে এনেছিলেন বিজেপি নেতারা। এটা গণতন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর উপরে আঘাত। আমরা এ নিয়ে রাজ্যপালের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। রাজ্যপাল আমাদের বলেছেন, তিনিও কিছু জানতেন না।’’
পার্থবাবুর অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা কেন্দ্রীয় বাহিনী ডাকিনি। আমাদের সেই ক্ষমতাও নেই। দলীয় অফিস আক্রান্ত হওয়ায় রাহুল সিংহ রাজ্যপালকে ফোন করেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা শুনেছি রাজভবন থেকে এর পরে রাজ্যের মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ও ডিজিকে ফোন করা হয়। দিল্লির সঙ্গেও কথা হয়েছিল শুনেছি।’’ কিন্তু কারা ডেকেছিল অতিরিক্ত বাহিনী? দিলীপবাবু বলেন, ‘‘রাহুল সিংহের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই তাঁর নিরাপত্তা বাড়িয়েছিলেন।’’