Kolkata Doctor Rape and Murder

নবান্ন অভিযানের ডাক কাদের? প্রকাশিত তিন ফেসবুক বন্ধু, যোগদানের শর্ত দিলেন শুভেন্দুদের

মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান হবে বলে কয়েক দিন ধরেই প্রচার চলছে সমাজমাধ্যমে। সেই আন্দোলনে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। কিন্তু এই কারা রয়েছেন এর আড়ালে?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৪ ২১:০১
Share:

বাঁ দিক থেকে প্রবীর দাস, সায়ন লাহিড়ি এবং শুভঙ্কর হালদার। —নিজস্ব চিত্র।

সোমবারের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। নচেৎ নবান্ন অভিযান মঙ্গলবার। সমাজমাধ্যমে এমনই প্রচার চলছে। সেই প্রচারে উল্লেখ করা হয়েছে ওই আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ‘পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র সমাজ’। যে ডাকে সাড়া দিয়ে ওই অভিযানে যোগ দিতে চান বলে জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু কারা রয়েছেন এর আড়ালে? প্রশ্নের জবাব দিতে শুক্রবার বিকেলে কলকাতা প্রেস ক্লাবে প্রকাশিত হলেন তিন পড়ুয়া। তাঁদের দাবি, তাঁরা কোনও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন। তিন জন একে অপরের ‘ফেসবুক বন্ধু’।

Advertisement

পুরো ঠিকানা বলতে নারাজ বীরভূমের প্রবীর দাস, কলকাতার সায়ন লাহিড়ি এবং নদিয়ার শুভঙ্কর হালদার। তিন জনেই ‘পড়ুয়া’ বলে দাবি। প্রবীর কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের এমএ। সায়ন মৌলানা আবুল কালাম আজাদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করছেন। শুভঙ্কর কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএড পড়ছেন। তবে তিন জনেরই দাবি, ‘‘আমরা একা নই। এই তিন জনও নই। আমাদের সঙ্গে গোটা সমাজ রয়েছে।’’ সায়নের বক্তব্য, ‘‘আরজি কর-কাণ্ডের পর থেকে যাঁরা পথে নেমেছেন, তাঁরা তো কোনও সংগঠনের নন। এই সমাজেরই মানুষ। সমাজমাধ্যমেও অনেকে প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের নিয়েই আমাদের সমাজ। আমরা কোনও সংগঠন নই। আমরা রাজ্যের ছাত্র সমাজ।’’

দৃশ্যতই আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে নবান্ন অভিযানের আহ্বায়কদের যতটা রাগ মুখ্যমন্ত্রীর উপর, ততটা নয় তৃণমূলের উপর। সায়ন বলেন, ‘‘নির্যাতিতার বিচার, দোষীদের শাস্তি আর মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ। মুখ্যমন্ত্রী ব্যর্থ। স্বাস্থ্য এবং পুলিশ দফতর তাঁরই হাতে। তাই তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে। তাঁর দলে কি অন্য কেউ যোগ্য নেই? নিজে সরে গিয়ে তাঁকে তো দায়িত্ব দিতেই পারেন।’’

Advertisement

আবার শুভঙ্করের দাবি, কোনও সাংগঠনিক শক্তি ছাড়াও আন্দোলন সম্ভব। তাঁর কথায়, ‘‘এখন বাংলায় যা দেখা যাচ্ছে, তাতে এটা আর অসম্ভব নয়। সমাজমাধ্যম সময়টা বদলে দিয়েছে। তাই সেই মাধ্যমকেই আমরা প্রচারের হাতিয়ার করেছি। সেখানেই আমরা জানিয়ে দেব, আগামী মঙ্গলবার কলকাতার কলেজ স্ট্রিট এবং হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে দুপুর ১টায় হবে জমায়েত। আশা করছি প্রচুর মানুষ আসবেন।’’

অনেকেই দাবি করেছিলেন, এর পিছনে আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) মদত রয়েছে। সেই প্রশ্নে সায়নের জবাব, ‘‘প্রথম দিকে এবিভিপি বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু পরে তারাই তো জানিয়ে দিয়েছে এর সঙ্গে তাদের কোনও যোগ নেই।’’ প্রসঙ্গত, বুধবার এবিভিপি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সেই দাবি করেছে। সেই সঙ্গে এই আন্দোলনে তাদের সমর্থনও জানিয়েছে। যা শুনে সায়ন বলেন, ‘‘আমরা তো চাই, সব প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের ছাত্রশাখা নবান্ন অভিযানে যোগ দিক। রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরাও আসতে পারেন। তবে ওই একটা দিনের জন্য তাঁরা যেন দলীয় পতাকা বাড়িতে রেখে আসেন।’’ শুভঙ্করের বক্তব্য, ‘‘রাজনৈতিক নেতারা যেন অবশ্যই সঙ্গে নিজের পরিবারের কোনও সদস্যকে নিয়ে আসেন। কারণ, আমরা চাই না এই সামাজিক আন্দোলনে কোনও রাজনৈতিক রং লাগুক।’’

ইতিমধ্যেই এই অভিযান নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টেও রাজ্য প্রসঙ্গটি তুলেছে। তবে সায়নরা মনে করছেন, আদালত বাধা তৈরি করবে না। তাঁরা বলেন, ‘‘কোনও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন নিশ্চয়ই আদালত বন্ধ করতে বলবে না। বরং পুলিশকে শান্তি-শৃঙ্খলা বজার রাখার নির্দেশই দেবে।’’ পুলিশ বাধা দিলে? শুভঙ্করের জবাব, ‘‘আমরা তো পুলিশের অনুমতিই নেব না! রাজ্যে প্রতিদিন যে এত মিছিল হচ্ছে, কোনওটারই তো অনুমতি লাগছে না। তবে আমরা পুলিশকে জানাব। আর আমাদের মিছিল স্তব্ধ করতে চেষ্টা করলে গোটা বাংলা সে দিন স্তব্ধ হয়ে যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement