এসএসকেএম হাসপাতালে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।
এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলে কোন বাড়িতে ‘গৃহবন্দি’ হবেন শোভন চট্টোপাধ্যায়? তাঁর বেহালার পর্ণশ্রীর বাড়িতে, যেখানে এখন তাঁর দুই সন্তানকে নিয়ে থাকেন বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায়? নাকি গোলপার্কের বহুতলে, যেখানে গত কয়েক বছর ধরে বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে থাকেন শোভন? শনিবার এসএসকেএম হাসপাতালে শোভনের চিকিৎসা নিয়ে তাঁর বান্ধবীর অভিযোগের মধ্যেই এই মর্মে খবর ছড়ানো হয় যে, শোভনকে ফিরতে হবে বেহালার বাড়িতেই! কিন্তু বৈশাখী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, শোভন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলে তিনি গোলপার্কের বাড়িতেই ‘গৃহবন্দি’ থাকবেন। কারণ, এই পর্বের যাবতীয় নথিতে তাঁর গোলপার্কের ঠিকানাই দেওয়া আছে।
প্রসঙ্গত, বৈশাখী চাইছেন না, শোভন আর হাসপাতালে থাকুন। চাইছেন না শোভন নিজেও। শোভনের আইনজীবী প্রতিমপ্রিয় দাশগুপ্ত শনিবার বলেন, ‘‘উনি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরতে চাইছেন। হাসপাতাল থেকে বলা হচ্ছে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন জেল কর্তৃপক্ষ। আবার প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ বলছেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার হাসপাতালের। এটা ওঁকে বাড়িতে গৃহবন্দি না থাকতে দিয়ে হাসপাতালে আটকে রাখার সামিল। যা আসলে আদালতের অবমাননা। ওঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া না হলে আমরা এটা নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হব।’’
কিন্তু শোভন ফিরবেন কোথায়? কোন বাড়িতে? রত্নার কাছে না বৈশাখীর কাছে?
শোভনের আইনজীবী প্রতিমপ্রিয় স্পষ্টই জানাচ্ছেন, শোভন ফিরবেন গোলপার্কে। বৈশাখীর কাছেই। তাঁর কথায়, ‘‘উনি গ্রেফতার হয়েছএন গোলপার্কের বাড়ি থেকে। সিবিআইয়ের অ্যারেস্ট মেমোতেও গোলপার্কের ঠিকানাই রয়েছে। হাইকোর্টের যাবতীয় আবেদনেও গোলপার্কের বাড়ির ঠিকানাই আছে। ফলে উনি হাসপাতাল থেকে ফিরলে সেখানেই ফিরবেন।’’ প্রসঙ্গত, শোভনের গোলপার্কের বাসস্থানের ঠিকানা হল ‘১৩৫, মেঘনাদ সাহা সরণি’। পর্ণশ্রী নয়, সেখানেই তিনি ফিরবেন।
প্রসঙ্গত, আদালতের নির্দেশে ফিরহাদ হাকিম এখন গৃহবন্দি। শুক্রবার থেকে তিনি রয়েছেন চেতলার বাড়িতে। এসএসকেএমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন শোভন, মদন মিত্র এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়। এর মধ্যে মদনের ভোকাল কর্ডে একটি ছোট রক্তের প্রলেপ জমা হয়েছে (ভোকাল অ্যাঞ্জিওমা) বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। সেটি পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। সুব্রতেরও চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসা চলছে শোভনেরও। কিন্তু তাঁর বান্ধবী শনিবার সরারিই অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালে শোভনের সে বাবে কোনও চিকিৎসা হচ্ছএ না। তাঁ কথায়, ‘‘হাসপাতালে শুধু ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। সেটা বাড়িতেও হতে পারে।’’