ভোটে পর্যাপ্ত আসন না মিললেও অনেক জায়গায় বিরোধীদের দলে টেনে পঞ্চায়েত বোর্ড গড়তে পিছুপা হয়নি তৃণমূল। বিরোধীদের দাবি, আমডাঙায় সেই ‘কৌশল’ সফল তো হলই না, উল্টে ধাক্কা খেতে হল শাসকদলকে।
১৯ আসনের তারাবেড়িয়া পঞ্চায়েতে ৯টি আসন পেয়েছে তৃণমূল। বোর্ড গড়তে দরকার ছিল মাত্র একজন বিরোধীকে দলে টানা। কিন্তু সোজা রাস্তায় সেটুকুও সম্ভব হয়নি। এই অবস্থায় রাত পোহালে বোর্ড গঠন। সেই রাত যখন কাটল, তখন নিহতের তালিকায় উঠে গিয়েছে তিন তিনটি নাম। ঘটনাস্থল, আমডাঙার বইচগাছি গ্রাম।
কেন মঙ্গলবার রাতের এই লড়াই?
সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃণাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘বোর্ড গঠনের আগের রাতে বিরোধী প্রার্থীদের গ্রামছাড়া করাই মতলব ছিল শাসক দলের।’’ তৃণমূল নেতা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, ‘‘আমাদের দলের উপরেই তো হামলা হয়েছে!’’
ভোট ঘিরে এ বার লড়াই শুরু হয়েছিল মনোনয়ন পর্বের সময় থেকে। সে সময়ে খুন হন এক সিপিএম সমর্থক। ভোটের দিনও প্রাণ গিয়েছিল এক বাম সমর্থকের। এত কিছুর পরেও ময়দান ছাড়েনি বিরোধীরা। সিপিএম-কংগ্রেস তো ছিলই, তাদের সঙ্গে হাত মেলায় বিজেপি। বিক্ষুব্ধ তৃণমূলও বিরোধী শিবিরের হাত শক্ত করেছে বলে খবর। সব মিলিয়ে ভোটে সিপিএম ৭টি এবং বিজেপি, কংগ্রেস ও নির্দল ১টি করে আসন পায় তারাবেড়িয়া পঞ্চায়েতে। জেলার অন্যত্র বিজেপি সিপিএমকে দলে টেনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়ছে। এখানে সিপিএমের সংগঠন শক্তিশালী বলে তাদের উপর ভরসা রেখেছে বিজেপি।
আমডাঙা এলাকায় বিশ বছর ধরে ভোট মানেই রক্তারক্তি। এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, বাম আমলে কংগ্রেস-তৃণমূলকে বাগে আনতে পারেনি শাসক দল। তৃণমূল আমলে যেন তারই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। বইচগাছিতে একটি দিঘি রয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা তাকে ‘বড়পুকুর’ বলেন। সেই পুকুরের এক প্রান্ত বামেদের ঘাঁটি। অন্য প্রান্ত তৃণমূলের। বছরভর দুই পাড়ের মানুষের মধ্যে আকচাআকচি লেগে থাকে। ভোট এলে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী লড়াই। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না।