বিল পাশ হয়েছে ঠিকই। কিন্তু ঘোষণামতো হুগলির সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানা এখনও অধিগ্রহণ করে উঠতে পারল না রাজ্য সরকার। রুগ্ণ টায়ার কারখানাটি সরকার অধিগ্রহণ করলে তাঁরা অন্তত বকেয়াটুকু পাবেন, এই আশাতেই দিন গুনছেন কয়েকশো শ্রমিক।
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতি বিদ্যুৎ রাউত মনে করেন শ্রমিক স্বার্থেই অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ‘‘শ্রমিকদের অবস্থা শোচনীয়। রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন, অবিলম্বে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ করা হোক।’’ শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘আমাদের দিকের কাজ শেষ। এ সংক্রান্ত বিল এনেছে রাজ্য সরকার। বিলটিতে রাষ্ট্রপতির সই হলেই সব কাজ শেষ হবে। এখন রাষ্ট্রপতির দফতরের কিছু প্রক্রিয়াগত কাজ চলছে।’’ গত বছর ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিল পাশ করিয়ে যে দুই কারখানা অধিগ্রহণের কথা ঘোষণা করেছিলেন, তার একটি ডানলপ। আইন না করে এই ধরনের কারখানা অধিগ্রহণ করা যায় না। বিল পাশ করিয়ে এবং সব নিয়ম মেনেই কারখানা অধিগ্রহণ করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানিয়েছিলেন। দ্বিতীয় দফায় তৃণমূল ক্ষমতার আসার পরেই সেই বিল পাশও হয়। তবু শ্রমিকদের আশঙ্কা যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন:কালবৈশাখীর ফাঁকিতে নাকাল
কারখানাটি খোলা রয়েছে নাম-কা-ওয়াস্তে। উৎপাদন বন্ধ। কর্ণধার পবন রুইয়া রয়েছেন জেল-হাজতে। কর্তৃপক্ষের তরফে কারখানাটি দেখভালের এখন কেউ নেই। গত কয়েক মাসে অন্তত ১৬৪ জন শ্রমিক অবসর নিয়েছেন। কিন্তু তাঁদের অবসর সংক্রান্ত নথিতে কেউ সই করেননি। ফলে, পেনশন জুটছে না। অবসরপ্রাপ্ত বেশিরভাগ শ্রমিকেরই প্রভিডেন্ড ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, এমনকী বেতনের টাকাও আটকে। বর্তমানে সেখানকার ৩৫৪ জন কর্মী শুধু মাসিক ১০ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান পাচ্ছেন এক বছর ধরে।
এই অবস্থাটার বদল চান শ্রমিকেরা। অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক অসীম চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার অন্তত পাঁচ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে। অবসরের কাগজে কর্তৃপক্ষের কেউ সই না-করায় পেনশনের টাকা পর্যন্ত পাচ্ছি না। সরকার দ্রুত অধিগ্রহণ করুক।’’ কারখানার সিটু সম্পাদক বিতান চৌধুরী মাস কয়েক আগে অবসর নিয়েছেন। তিনিও বলেন, ‘‘পরিস্থিতি মারাত্মক। মৃত শ্রমিকদের পরিজনেরাও প্রাপ্যটুকু পাননি।’’