ট্যাংরার দে পরিবারের তিন সদস্য রোমি দে, সুদেষ্ণা দে এবং প্রিয়ম্বদা দে-কে খুন করা হয়েছে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
মা, কাকিমা আর দিদিকে খুন করেছে তার কাকা প্রসূন দে। ট্যাংরাকাণ্ডের জীবিত ১৪ বছরের কিশোর প্রতীপ দে এমনটাই দাবি করেছে পুলিশের কাছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই এক আধিকারিককে উল্লেখ করে এ কথা জানিয়েছে। কিশোরের বয়ান অনুযায়ী, ট্যাংরার দে পরিবারের দুই বধূ রোমি দে, সুদেষ্ণা দে এবং কিশোরী প্রিয়ম্বদার খুনি প্রসূন দে। পুলিশের কাছে সে দিনের ঘটনা বর্ণনাও করেছে কিশোর। সোমবার তাকে বাইপাসের ধারের হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। ছাড়া পাবেন প্রসূনও। এর পর পুলিশ কী করবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, দু’জনকেই অন্য কোনও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হবে। দে পরিবারের দুই ভাই প্রণয় এবং প্রসূন সম্পূর্ণ সুস্থ হলে তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তদন্তকারীরা।
প্রসূনই যে দুই বধূর খুনি, তা আগে দাবি করেছিলেন তাঁর দাদা প্রণয়। বর্তমানে তিনি এনআরএস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পিটিআইকে ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, কিশোর আপাতত সুস্থ। তার সঙ্গে তদন্তকারীরা কথা বলেছেন। প্রাথমিক ভাবে সে দাবি করেছে, তার মা, কাকিমা এবং দিদি প্রিয়ম্বদাকে খুন করেছেন কাকা প্রসূন। তবে কিশোরের বয়ান খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আধিকারিকের কথায়, ‘‘আমাদের কাছে এখনও পর্যন্ত যা তথ্যপ্রমাণ রয়েছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে, ছোট ভাই প্রসূনই তিনটি খুনে প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন। তবে তাঁর দাদা প্রণয়ও খুনগুলির পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত।’’
১৪ বছরের প্রিয়ম্বদার মৃত্যু হয়েছে খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরে। অভিযোগ, তাকে জোর করে ঘুমের ওষুধ মেশানো পায়েস খাওয়ানো হয়েছিল। পিটিআইয়ের কাছে ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, বাবা-কাকার পরিকল্পনা জানতে পেরে গিয়েছিল প্রিয়ম্বদা। সেই কারণে সে কিছুতেই পায়েস খেতে রাজি হয়নি। তাকে মারধর করে পায়েস খাওয়ানো হয়, দাবি করেছে কিশোর। সেই কারণেই প্রিয়ম্বদার নাকের নীচে, ঠোঁটে এবং শরীরের অন্যান্য জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, দুই বধূ রোমি এবং সুদেষ্ণার মৃত্যু হয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে। ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁদের হাতের শিরা এবং গলার নলি কেটে দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার গভীর রাতে কিশোরকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন প্রণয় এবং প্রসূন। বুধবার ভোরের দিকে তাঁদের গাড়ি বাইপাসের ধারে মেট্রোর পিলারে ধাক্কা খায়। দুর্ঘটনায় তিন জনই গুরুতর জখম হয়েছিলেন। আপাতত তাঁদের সুস্থ হওয়ার অপেক্ষায় তদন্তকারীরা।