সন্দীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেই সূত্রে গত শুক্রবার রাজ্যের সাত জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। সেই তল্লাশিতে কী কী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তার খতিয়ান দিল ইডি। ইডি মঙ্গলবার রাতে সমাজমাধ্যমে জানিয়েছে, সে দিনের তল্লাশিতে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করেছে। আরজি করে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা ঘোষের সম্পত্তি সংক্রান্ত নথি এবং বেশ কয়েকটি ডিজিটাল ডিভাইসও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
বেআইনি আর্থিক লেনদেন প্রতিরোধ আইন, ২০০২-এর আওতায় আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করছে ইডি। সেই তদন্তে গত শুক্রবার সন্দীপের বাড়ি-সহ বেশ কিছু জায়গায় তল্লাশি চালান ইডির আধিকারিকেরা। ইডির তরফে জানানো হয়েছে, সে দিনের তল্লাশিতে তারা জানতে পেরেছে যে, সন্দীপ এবং তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে যথাযথ অনুমোদন ছাড়াই দু’টি সম্পত্তি কিনেছিলেন। যদিও এর পর ২০২১ সালে সঙ্গীতার নামে সন্দীপ আরও একটি সম্পত্তি কিনেছিলেন, যেটির যথাযথ অনুমোদন ছিল তাঁদের কাছে। সেই সময় সন্দীপ আরজি করের অধ্যক্ষ পদে আসীন ছিলেন এবং সঙ্গীতা ওই কলেজেরই সহকারী অধ্যাপক পদে ছিলেন।
ইডি আরও জানিয়েছে, তল্লাশি অভিযানের সময় সম্পত্তি সম্পর্কিত নথি, যেমন মুর্শিদাবাদে একটি ফ্ল্যাট, কলকাতায় তিনটি ফ্ল্যাট, সন্দীপ এবং সঙ্গীতার কলকাতার দু’টি বাড়ি এবং তাঁদের মালিকানাধীন একটি খামারবাড়ি সম্পর্কিত নথিপত্র পাওয়া গিয়েছে। তল্লাশির সময় সন্দীপের বিভিন্ন নথি এবং ডিজিটাল ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ইডির সন্দেহ, এই সম্পত্তিগুলি দুর্নীতির টাকায় কেনা হয়েছিল।
গত শুক্রবার কলকাতা, হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ, হুগলির একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। সে দিন ভোর ৬টায় প্রথম সন্দীপের বেলেঘাটার বাড়িতে গিয়ে ফেরত আসতে হয় ইডির আধিকারিকদের। পরে তাঁরা ফের সন্দীপের বাড়িতে যান। সেখানে তল্লাশি চলে বেশ কিছু ক্ষণ। সকাল ৭টা নাগাদ ইডির একটি দল চন্দননগরের পাদ্রিপাড়ায় মেরিমাঠ সংলগ্ন এলাকার একটি বাড়িতে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সেটি আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু তালাবন্ধ বাড়ির সামনে দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষার পর বৈদ্যবাটিতে যায় ইডির দলটি। সেখানে কুণাল রায় নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তল্লাশি চলে। হাওড়ায় তল্লাশি চলে বিপ্লব সিংহ এবং কৌশিক কোলের বাড়িতে। তল্লাশি চলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুভাষগ্রামে প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতেও। তাঁর বাড়িতে প্রায় সাত ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পর ইডি আটক করে সন্দীপ ঘোষের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত প্রসূনকে।