দক্ষিণ কাঁথির বিধানসভা উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছে তৃণমূলই। এখন নতুন কৌতূহল, মানস ভুঁইয়ার কী হবে? কংগ্রেস এবং সিপিএম ছেড়ে আরও যে পাঁচ বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন, তাঁদেরই বা ভবিষ্যৎ কী?
মানসবাবু, তুষার ভট্টাচার্যের মতো পাঁচ জন কংগ্রেস বিধায়ক ভোটের পরে জার্সিবদল করে তৃণমূল হলেও বিধানসভায় খাতায়-কলমে তাঁরা পুরনো দলেরই সদস্য। এক সময় শাসক দলের অন্দরে প্রস্তাব ছিল, ‘দলবদলু’ বিধায়কেরা ইস্তফা দেবেন। তার পরে উপনির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হবেন। কিন্তু তৃণমূল সূত্রের খবর, দক্ষিণ কাঁথির ফলাফল দেখার পরে আপাতত উপনির্বাচনে তেমন আগ্রহী নন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এমন নয় যে, ভোট জয় নিয়ে তাঁদের প্রত্যয়ের অভাব আছে! কিন্তু তৃণমূল স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে, ফের বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন মানেই সেখানে বিজেপি-র ভোট বৃদ্ধির ছবি উঠে আসবে। গেরুয়া শিবিরের শক্তি বৃদ্ধির সেই ছবি সুখকর হবে না শাসক দলের কাছে। তা ছাড়া, বিজেপি ধারাবাহিক ভাবে অক্সিজেন পেতে থাকলে পঞ্চায়েত ভোটেও তারা বেকায়দায় ফেলতে পারে তৃণমূলকে।
হিসেবমতো আগামী বছর মে মাসে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা। কিন্তু তৃণমূল সূত্রের ইঙ্গিত, পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে এনে এ বছর ডিসেম্বর বা আগামী বছর জানুয়ারির মধ্যে সেরে ফেলতে চান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তার আগে আর কোনও আসনে উপনির্বাচনের সম্ভাবনা কম।
এমন সিদ্ধান্তে মানসবাবুদের অবশ্য সমস্যায় পড়তে হবে। অতীতে দলবদল করেও বিধানসভায় পুরনো দলের বিধায়ক হিসাবে থেকে যাওয়ার নজির আছে। এক সময়ে সুব্রত মুখোপাধ্যায় তৃণমূলে যোগ দিলেও বিধানসভায় কংগ্রেসের বিধায়ক থেকে গিয়েছিলেন। কিন্তু এখন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান সেই সুযোগ দিতে চান না মানসবাবুদের। দলত্যাগ-বিরোধী আইনের আওতায় বিধানসভায় মানসবাবুদের সদস্যপদ খারিজ করার জন্য ইতিমধ্যেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দাবি জানিয়েছেন মান্নান। ১৯ ও ২০ এপ্রিল চার ‘দলবদলু’ বিধায়কদের ব্যাপারে শুনানি রয়েছে বিধানসভায়। সব মিলিয়ে ফাঁপরেই মানসবাবুরা! এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘দল এখনও কিছু জানায়নি। যা বলার, ১৯ তারিখ বলব।’’