‘নতুন’ তৃণমূলের ব্যাখ্যা দিলেন কুণাল ঘোষ। ফাইল চিত্র।
মানুষের আশা-ভরসার উপর দাঁড়িয়ে তৃণমূল ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল। সেই তৃণমূলকেই ফিরিয়ে আনতে চাইছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় আনন্দবাজার অনলাইনের ‘অ-জানাকথা’য় এসে ‘নতুন’ তৃণমূলের ব্যাখ্যা দিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক তথা অন্যতম মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিসভায় উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়িতে সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, আগামী ছ’মাসের মধ্যে নতুন তৃণমূলকে দেখতে পাওয়া যাবে। ঠিক যেমন মানুষ দেখতে চান। সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতায় এই মর্মে হোর্ডিংও নজর কেড়েছিল। জনমানসে কৌতূহল তৈরি হয়েছে, নতুন তৃণমূলের অর্থ কী? ‘অ-জানাকথা’য় এসে তারই ব্যাখ্যা দিলেন কুণাল। জানালেন, ২০১১-য় যে দলের সঙ্গে ছিল মানুষের ঢালাও আশীর্বাদ, সেই দলকেই ফিরিয়ে আনার প্রয়াস চলছে। কুণালের কথায়, ‘‘নতুন তৃণমূল মানে, অভিষেক চাইছেন, ২০১১ সালের তৃণমূলকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে। যে দল মানুষের আশা-ভরসার উপর দাঁড়িয়ে সরকারে এসেছিল। ক্ষমতায় থাকলে মেদ তৈরি হয়। সেই মেদ ঝরিয়ে ২০১১-র তৃণমূলকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে চাইছেন অভিষেক। তাকেই বলছি নতুন তৃণমূল।’’
একে কি তৃণমূলের শুদ্ধকরণ অভিযান বলা যায়? কুণালের জবাব, ‘‘শুদ্ধকরণ অভিযান চলছে।’’ কিন্তু কেমন সেই শুদ্ধকরণ, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন কুণাল। তিনি বলেন, ‘‘ভুল-ত্রুটি সব দলেই ছিল। পুরোটা ত্রুটিমুক্ত করা সম্ভব নয়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার বলছেন, সরকারি স্তরেও বলছেন, পুলিশকে সক্রিয় করছেন। আবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা স্তরের নেতাদের নিয়ে বার বার বসে স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছেন। মোটের উপর, ব্যাপারটা আরও গতি পেয়েছে। আরও তীক্ষ্ণ নজরদারির ব্যাপার এসেছে।’’
প্রসঙ্গত, বাম জমানা থেকেই ‘শুদ্ধকরণ’ শব্দবন্ধের সঙ্গে পরিচিত বাঙালি। তা হলে কি তৃণমূলের ‘সিপিএমিকরণ’ হতে চলেছে? কুণালের অবশ্য মত, আদতে হচ্ছে ঠিক উল্টোটা। তিনি বলেন, ‘‘সিপিএমের ক্ষেত্রে যেটা আলিমুদ্দিন স্ট্রিট বনাম রাইটার্স বিল্ডিং ছিল, এখানে ঠিক উল্টো। অভিষেক বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের নেত্রী এবং নেত্রীর হাত শক্তিশালী করতে হবে। আবার মমতার কাজের চাপ বাড়তে বাড়তে কিছু জিনিস অভিষেকের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন।’’ কুণাল বলেন, ‘‘সবচেয়ে বড় কথা, সিপিএমে তরুণ প্রজন্ম বলে কিছু ছিল না। সিপিএমে তরুণ প্রজন্মটি ছিল ষাটোর্ধ্ব। তাই সিপিএম যখন ক্ষমতাচ্যুত হল, তখন নতুন প্রজন্ম পড়ে গেল সামনে। যাঁদের সামনে থেকে রাজনীতি করার কোনও অভিজ্ঞতাই নেই। কিন্তু তৃণমূলে মমতাদি পাঁচ প্রজন্ম তৈরি করে দিয়েছেন। সব প্রজন্মের মেলবন্ধন চলছে। বিষয়টি মমতা বনাম অভিষেক নয়, বরং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি ডাবল ইঞ্জিন দেখাতে গিয়েছিল, আমরাই সেই ডাবল ইঞ্জিন দেখিয়ে দিয়েছি, আর এখানে সঙ্ঘাতের কোনও জায়গা নেই।’’