(বাঁ দিক থেকে) কুণাল ঘোষ, শমীক ভট্টাচার্য এবং সুজন চক্রবর্তী। —ফাইল চিত্র।
এসএসসি নিয়োগ মামলায় রায়কে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিল শাসকদল তৃণমূল। অন্য দিকে, প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিলের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধে চলেছে বিজেপি। তাঁর পদত্যাগের দাবি করেছে তারা। মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেলে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে বলেছে আদালত। তার প্রেক্ষিতে সিপিএমের বক্তব্য, তৃণমূলেরও উচিত টাকা ফেরত দেওয়া!
সোমবার হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বার রশিদির বিশেষ ডিভিশন বেঞ্চ এসএসসি মামলার রায়ে সব মিলিয়ে মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জনের চাকরি বাতিল করেছে। অর্থাৎ, ২০১৬ সালে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের সকলের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, প্যানেলের মেয়াদ শেষের পরে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, জনগণের টাকা থেকে বেতন নিয়েছেন, তাঁদের চার সপ্তাহের মধ্যে সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে হবে। বছরে ১২ শতাংশ সুদে টাকা ফেরত দিতে হবে। কুণালের বক্তব্য, ‘‘এই রায়ের ফলে সকলের জন্যই অনিশ্চয়তা তৈরি হল। কিছু মানুষের অন্যায়ের ফলে সকলে তো ভুগতে পারে না।’’ সেই সঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বোমা-হুঁশিয়ারি নিয়েও তিনি বলেন, ‘‘আদালতের রায় আগাম অনুমান করে যদি কেউ বলেন, বোমা পড়বে, তা হলে তার মধ্যে সম্পর্ক খোঁজার যথেষ্ট কারণ থাকতে পারে।’’
আদালতের রায় সম্পূর্ণ ত্রুটিপূর্ণ, ভুল বলে দাবি করলেন নিয়োগপ্রাপকদের অন্যতম আইনজীবী তথা তৃণমূল নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এটি সম্পূর্ণ ত্রুটিপূর্ণ রায়। কারও কারও ক্ষেত্রে অভিযোগ ছিল, ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রে তো অভিযোগ ছিল না। তা হলে কী করে এই রায় হয়?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টে গেলে পাঁচ মিনিটে স্থগিতাদেশ হয়ে যাবে। আমি সব শিক্ষককে বলছি, নিশ্চিন্তে থাকুন। এই রায় সম্পূর্ণ ভুল রায়।’’
অন্য দিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘এই রায় প্রমাণ করল তৃণমূল শিক্ষকতার মতো একটি সম্মানজনক পেশাকে হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগলের মতো বাজারে বিক্রি করেছে। এই রায়ের ফলে ২৩ হাজার পরিবার অথৈ জলে পড়বে। এর দায় প্রশাসনিক প্রধান হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই কালবিলম্ব না করে উনি পদত্যাগ করুন।’’ বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা চাই যোগ্যদের চাকরি পাওয়া উচিত। তার ব্যবস্থা করতে হবে।’’ অন্য দিকে, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চার সপ্তাহের মধ্যে যাঁদের টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে, তাঁরা কোথা থেকে টাকা ফেরাবেন, আমি জানি না। কিন্তু যাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁরা একটা সুন্দর ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষায় নিজেদের সর্বস্ব তৃণমূল নেতাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। তৃণমূলকে সেই টাকা ফেরাতে হবে। যাঁরা তৃণমূল নেতাদের টাকা দিয়েছিলেন, তাঁরা থানায় এফআইআর করুন।’’