প্রতীকী ছবি।
রুটিরুজির টানে আমযাত্রীর জোরালো দাবির প্রেক্ষিতে শহরতলির লোকাল ট্রেন চালানোর ব্যাপারে আলোচনা চেয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছে রেল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত সরকার এই বিষয়ে কিছু জানায়নি।মহোৎসবে ভিড়ের জেরে করোনা সংক্রমণের সম্ভাব্য ঊর্ধ্বমুখী হার নিয়ে সর্বত্রই উদ্বেগ বেড়েছে। চিকিৎসকদের একাংশের আশঙ্কা, পুজোর পরে সংক্রমিতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে। এই অবস্থায় রাজ্য প্রশাসন তড়িঘড়ি লোকাল ট্রেন চালু করার পক্ষপাতী নয় বলে নবান্ন সূত্রের খবর। মেট্রো স্টেশনের ঘেরা পরিসরে ভিড় নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা রূপায়ণ করা গেলেও লোকাল ট্রেনের ক্ষেত্রে তার কতটা প্রয়োগ করা যাবে, সেই বিষয়ে রাজ্য প্রশাসন তো বটেই, রেলেরও একাংশের মধ্যে সংশয় রয়েছে।
পুজো এগিয়ে আসায় সর্বত্রই মানুষের মধ্যে বাইরে বেরোনোর প্রবণতা বাড়ছে। জীবিকার প্রয়োজনে কাজে তো বেরোতে হচ্ছেই, সেই সঙ্গে বাজারহাট করতেও ভিড় করছেন অনেকে। ফলে পুজোর মুখে লোকাল ট্রেন চালু করে দিলে তা প্রকারান্তরে পুজোর ভিড়কেই উৎসাহিত করতে পারে বলে প্রশাসনের একাংশের অভিমত। সে-ক্ষেত্রে কলকাতায় আসা মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে।
ফলে সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। পুজো সাঙ্গ হয়ে গেলে বরং ভিড় কিছুটা থিতিয়ে আসার সম্ভাবনা। একান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোনোর প্রবণতাও কিছুটা কমতে পারে। সব দিক দেখেই রাজ্য প্রশাসন লোকাল ট্রেন চালু করার সিদ্ধান্ত নিতে চায় বলে নবান্ন সূত্রের খবর।রেলকর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট বিশেষ ট্রেনে সাধারণ যাত্রীদের জোর করে উঠতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে হুগলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন স্টেশনে বিক্ষোভ ছড়িয়েছে। এতে রেল উদ্বিগ্ন। এই প্রেক্ষিতেই পূর্ব রেলের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার সমাধানসূত্র খুঁজতে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দিয়ে চিঠি লিখেছেন। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং মানবাধিকার সংগঠনও এই নিয়ে সরব হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভাঙড়ে রাজ্জাকের মৃত্যু, ভাল আছেন রেজ্জাক
আরও পড়ুন: অ্যাপ ক্যাব নিয়ে পরিবহণ অভিযান
মাসখানেক আগে মেট্রো পরিষেবা শুরু করার সময় শহরতলির লোকাল ট্রেন চালু করার বিষয়টিও আলোচনায় এসেছিল। সেই সময় মেট্রো এবং লোকাল ট্রেন একসঙ্গে চালু করার ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছিল রাজ্য। তার পরে এক মাস কেটে গেলেও লোকাল ট্রেন চালু করার বিষয়ে কোনও রকম সাড়াশব্দ করেনি তারা। তাই রেলের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্পষ্ট করার দাবি উঠেছে। রেল সূত্রের খবর, পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেল লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করার প্রস্তুতি সেরে রেখেছে। তবে করোনা আবহে ভিড় নিয়ন্ত্রণ অন্যতম প্রধান নির্ণায়ক বিষয় হওয়ায় লোকাল ট্রেন চালানোর ব্যাপারটা নির্ভর করছে রাজ্য সরকারের আগ্রহের উপরেই।রাজ্যে চিকিৎসকদের সংগঠন জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অব ডক্টর্স রেল বোর্ডকে চিঠি দিয়ে রেলকর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট বিশেষ ট্রেনে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের উঠতে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।