কর ও জরিমানা আদায়ে এই বাহিনী রাস্তায় প্রতিদিন অভিযান চালাবে। প্রতীকী ছবি।
বাড়তি অর্থসংস্থান করতে এমভিআই-দের (মোটর ভেহিকল ইনস্পেক্টর) কাজ ঢেলে সাজার পরিকল্পনা করেছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। তাঁদের অধীনে গড়া হচ্ছে বিশেষ বাহিনী। কর ও জরিমানা আদায়ে এই বাহিনী রাস্তায় প্রতিদিন অভিযান চালাবে। এর ফলে কর ও জরিমানা আদায় বাড়বে বলে মনে করছেন দফতরের কর্তারা।
ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য সরকার এখন অর্থসঙ্কটে ভুগছে। এই অবস্থায় পরিবহণ দফতরকেও সরকার আয় বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ বাহিনী গড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। রাজ্যে দফতরের অধীনে নথিভুক্ত গাড়ি আছে ১ কোটি ৪৬ লক্ষ। বছরে এই সব গাড়ি থেকে কর ও জরিমানা বাবদ আদায় হয় প্রায় ২৬০০ কোটি টাকা। কর ফাঁকি রোধ করা গেলে এই আয় বেড়ে হতে পারে বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘কর না বাড়িয়েও পরিবহণ দফতর আয় বাড়াতে পারে। আমরা সেই পরিকল্পনাই করেছি। মুখ্যমন্ত্রীও এ ব্যাপারে যা করণীয় তা করার জন্য আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন।’’
কী করবে বিশেষ বাহিনী?
দফতরের কর্তারা জানান, বিশেষ বাহিনী শুধু অভিযান চালানোর কাজেই ব্যস্ত থাকবে। যে সব গাড়ি কর ফাঁকি দেবে তাদের জরিমানা করবে। দূষণ বিধি মেনে গাড়িগুলি চলছে কি না তা দেখবে। ওভারলোডিং হলে সেই ট্রাককে ধরেও জরিমানা করা হবে। শুধু তা-ই নয়, ছোট গাড়ি ও অটোর কর ফাঁকির প্রবণতা রোধ করতে কর আদায় প্রক্রিয়ার কিছু পরিবর্তন করা হবে বলেও দফতর সূত্রের খবর।
দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, যে বিশেষ বাহিনী করা হচ্ছে, তারা পুলিশের সহায়তা না নিয়েই অভিযান চালাবে। দফতর থেকে তাদের জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হবে। বাহিনীতে অন্তত দু’জন সশস্ত্র কনস্টেবল থাকবেন। সশস্ত্র কনস্টেবল রাখার বিষয়টি অবশ্য মন্ত্রিসভায় অনুমোদন করাতে হবে। সেই প্রক্রিয়া চলছে।
দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন এমভিআই-দের দিয়ে যে অভিযান চলে, তাতে বেশ কিছু গলদ আছে। প্রথমত, অফিসের কাজ সেরে সপ্তাহে তিন-চার দিন অভিযান চালান এমভিআই-রা। নিজেদের গাড়ি না-থাকায় স্থানীয় প্রশাসনের কাছে তাঁদের গাড়ি চাইতে হয়। তা-ও চাইলেই গাড়ি পাওয়া যায় না। গাড়ি পেলে পুলিশ পাওয়া যায় না। অনেক সময় যেখানে অভিযান চালানো হবে, পুলিশের একাংশ আগে থেকে খবর দিয়ে দেয়। ফলে, গাড়িগুলি অন্য রাস্তা দিয়ে পালিয়ে যায়। সেই ফাঁক আর রাখতে চায় না পরিবহণ দফতর।
সবমিলিয়ে আগামী দু’বছরের মধ্যেই আয়ের নয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব বলে দাবি পরিবহণ দফতরের কর্তাদের।