প্রতীকী ছবি।
‘ওভারলোডিং’ বা লরি-সহ বিভিন্ন গাড়িতে অনুমোদিত পরিমাণের থেকে বেশি পণ্য বহন রুখতে তৎপরতা বৃদ্ধির সুফল পাচ্ছে রাজ্যের পরিবহণ দফতরের এনফোর্সমেন্ট বিভাগ। শুধু গাড়িতে বাড়তি পণ্য বহনের মোকাবিলা করে এক বছরে সরকারের আয় হয়েছে প্রায় ৮৩ কোটি টাকা!
এটা সদ্য সমাপ্ত অর্থবর্ষের হিসেব। পরিবহণ দফতরের দাবি, বাড়তি পণ্য বহনের জরিমানা বাবদ আয় বেড়েছে ৬৯ শতাংশ। ২০২১-২২ আর্থিক বছরে ওই খাতে সরকারের আয় ৮৩ কোটি ৭২ লক্ষ ৫৬ হাজার ৭৩২ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে এই খাতে তাদের আয় হয়েছিল ৫০ কোটি ৭৪ লক্ষ ১৫ হাজার ৫৪৭ টাকা।
গত এক বছরে তল্লাশি চালানোর হারও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। ২০২০-২১ সালে রাজ্যে ৩৬,৮২০টি গাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছিল, ২০২১-২২ আর্থিক বছরে তল্লাশি চালানো হয় ৫৪,৭৪৯টি গাড়িতে। করোনা এবং লকডাউন এর অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া দূষণ নিয়ন্ত্রণের ছাড়পত্র, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত শংসাপত্র, হাই সিকিয়োরিটি নম্বর প্লেট যাচাইয়ের কাজও করেছে এনফোর্সমেন্ট বিভাগ।
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, বিভিন্ন খাতে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে তাদের আয় হয়েছে ২৬৬৪ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে আয়ের পরিমাণ ছিল ২৩৬৬.২ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায়ের অঙ্কে এক বছরে আদায় বেড়েছে ১২.৫৮ শতাংশ।
ওভারলোডিংয়ের কারণে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি ছাড়াও জাতীয় ও রাজ্য সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে বারে বারে। সমস্যা মেটাতে ওভারলোডিং বন্ধে জরিমানার অঙ্ক বাড়ানো ছাড়াও সম্প্রতি ই-চালান ব্যবস্থা চালু করেছে রাজ্য সরকার। অভিযুক্ত গাড়িকে আটক করার পরে সেখানে ছবি-সহ যাবতীয় তথ্য আপলোড করতে হচ্ছে। এর ফলে অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির সম্ভাবনা নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের।
ওভারলোডিংয়ের অভিযোগে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে সব চেয়ে বেশি (৪৩১৯টি) গাড়ি ধরা পড়ে মুর্শিদাবাদ জেলায়। তার পরে যথাক্রমে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান (৩৮০৪), কোচবিহার (৩৬৩৭), পশ্চিম বর্ধমান (১৮৮১), পশ্চিম মেদিনীপুর (১৫৬৯), উত্তর ২৪ পরগনা (১২৮২) ও বীরভূম (১২২১)। বাড়তি পণ্য বহনের দায়ে জরিমানা খাতে সব চেয়ে বেশি আয় (১৭ কোটি ৯৪ লক্ষ ২৪ হাজার ১৬৪ টাকা) হয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়। মুর্শিদাবাদে আয় ন’কোটি
পঁচাশি লক্ষ টাকা। পশ্চিম বর্ধমানে আয় হয়েছে সাত কোটি একান্ন লক্ষ টাকারও বেশি। কোচবিহার জেলায় ওই আয় পাঁচ কোটি ৭৩ লক্ষ এবং বীরভূমে পাঁচ কোটি ৪১ লক্ষ টাকার বেশি।
১৫ বছরের পুরনো গাড়ি সব চেয়ে বেশি সংখ্যায় দেখা গিয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে (৫৬) এবং পুরুলিয়ায় (৪৮)। ফিটনেস সার্টিফিকেট ছাড়া সব চেয়ে বেশি গাড়ি ধরা পড়েছে পূর্ব বর্ধমান (৬৯০), হুগলিতে (৬১৭)।