প্রমাণ দেখতে আর কত দিন সময় লাগাবে সিবিআই? আদালতে সেই প্রশ্নও তোলেন পার্থর আইনজীবী। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ ।
জামিন পেতে হলে ধর্নায় বসা ছাড়া আর কোনও উপায় তিনি দেখছেন না। আদালতে ‘জলি এলএলবি’ সিনেমার প্রসঙ্গ টেনে এনে এমনটাই জানালেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর আইনজীবী সেলিম রেহমান। পাশাপাশি আদালতে পার্থের হয়ে জামিনের আবেদন করার পর তাঁর দাবি, সিবিআইয়ের তরফে ‘বৃহৎ ষড়যন্ত্র’-র কথা বললেও তা দেখাতে পারছেন না কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরা। প্রমাণ দেখতে আর কত দিন সময় লাগাবে সিবিআই? আদালতে সেই প্রশ্নও তোলেন পার্থর আইনজীবী।
সেলিম বলেন, ‘‘কোনও রকম সুবিচার পাওয়া যাচ্ছে না। সিবিআই পুরো বিষয় ধামাচাপা দিয়ে রেখেছে। বার বার শুধু বৃহৎ ষড়যন্ত্রের কথা বলা হচ্ছে। কত জনের বয়ান রেকর্ড করা হবে, তার ঠিক নেই। শুধু বয়ান রেকর্ড হবে বলে হেফাজতে থাকতে হবে! জানি না সিবিআই নতুন কী প্রমাণ পেয়েছে। মামলা তো আর অনন্তকাল চলতে পারে না।’’
সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে সেলিম এ-ও দাবি করেন, কে যোগ্য আর কে অযোগ্য, তা দেখার দায়িত্ব দফতরের ছিল, তাঁর মক্কেলের না। সিবিআই পুরো দোষ তাঁর মক্কেলের উপর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেন তিনি।
তিনি উল্লেখ করেন, লেনদেনের কথা বলা হচ্ছে অথচ একটা টাকাও পার্থের কাছ থেকে উদ্ধার হয়নি। তা হলে সেই টাকার সঙ্গে পার্থের কী সম্পর্ক, তোলা হয় সেই প্রশ্নও।
পার্থের আইনজীবী সেলিম যোগ করেন, ‘‘বিচার পেতে এর পর তো ‘জলি এলএলবি’ সিনেমার মতো আমার ধর্না দেওয়া ছাড়া আর উপায় নেই।’’ সিবিআইয়ের তরফে যে প্রভাবশালী তত্ত্ব দেওয়া হয়েছে তা-ও ভ্রান্ত বলে উল্লেখ করেন তিনি।
একই দাবি করেছেন এস পি সিনহার আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত। সঞ্জয় বলেন, ‘‘তদন্তে গতি নেই। অভিযুক্তকে বার বার প্রভাবশালী বলা হচ্ছে। অথচ তিনি প্রভাবশালী নন। বলা হচ্ছে এই মামলায় ৩৮১ জনের মধ্যে ১০জন বেনিয়মে চাকরি পেয়েছেন। এই সংখ্যা কী অনেক বেশি?’’
স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ মামলা অভিযুক্ত রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা এবং শিল্পমন্ত্রী পার্থ। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত পার্থ বর্তমানে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দি। তাঁকে বৃহস্পতিবার সেখান থেকে মামলার শুনানির জন্য আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর সঙ্গে আলিপুরের এই জজ কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগে প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি আরও কয়েক জনকে। ছিলেন সুবীরেশ ভট্টাচার্য, কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়, শান্তিপ্রসাদ সিন্হা, এমনকি, দুই মিডল ম্যান প্রসন্ন রায় এবং প্রদীপ সিংহও। পার্থ-সহ সকলকেই ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।