ববিতা সরকার।
আগেই তাঁর ন্যায্য চাকরি ফেরত পেয়েছেন। শুক্রবার ফেরত পেলেন সেই চাকরি থেকে বঞ্চিত হওয়া সময়কালের সমস্ত টাকাও। সবটাই আদালতের নির্দেশে। ববিতা সরকার বঞ্চিত হয়েছিলেন মন্ত্রীকন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর জন্য। বেতনের টাকার দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি ফেরত পেয়ে সেই ববিতাই জানালেন, অঙ্কিতার জন্য তাঁর খারাপ লাগার কথা।
রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর মেয়ে অঙ্কিতার জন্য প্রায় পাঁচ বছর ন্যায্য চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন ববিতা। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে অঙ্কিতার ফেরত দেওয়া সমস্ত টাকা হাতে পেয়ে ববিতা বললেন, ‘‘অঙ্কিতার জন্য খারাপ লাগছে।’’ শুক্রবার অঙ্কিতা তাঁর প্রাপ্য দ্বিতীয় এবং শেষ কিস্তির টাকা হাতে পাওয়ার পর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল আনন্দবাজার অনলাইন। ববিতাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, অঙ্কিতার বেতনের সমস্ত টাকা পেয়ে কেমন লাগছে? তার জবাবে ববিতা বলেন, ‘‘এত দিন কাজ করার পর তার পারিশ্রমিক ফেরত দিতে হয়েছে অঙ্কিতাকে। ওর জন্য খারাপ লাগছে।’’
অঙ্কিতার নাম নিয়ম ভেঙে এসএসসির মেধাতালিকায় ওঠায় ছিটকে গিয়েছিলেন তালিকায় স্থান পাওয়া শিলিগুড়ির মেয়ে ববিতা। তাঁর প্রতিবাদের জেরেই একে একে প্রকাশ্যে আসতে থাকে এসএসসি সংক্রান্ত একাধিক ‘অনিয়মের ঘটনা’। আদালত জানিয়েছে, চাকরি পাওয়ার যোগ্য হয়েও প্রায় পাঁচ বছর শিক্ষকতার চাকরি করতে পারেননি ববিতা। সেই সময়ে তাঁর জায়গায় শিক্ষকতার করেন অঙ্কিতা। ববিতা বলেন, ‘‘খারাপ লাগছে তো ঠিকই। তবে ও অবৈধ ভাবে চাকরি পেয়েছিল। তার আইনি বিচার পেয়ে খারাপ লাগাটা পূরণ হয়ে গিয়েছে।’’
যদিও ববিতার আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘‘উনি অন্যায় ভাবে চাকরি পেয়েছিলেন। ববিতা এত দিন বঞ্চিত ছিলেন। অসৎ উপায়ের শিকার তিনি। ববিতার জীবন থেকে অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছে। অনেক মুহূর্ত হারিয়ে গিয়েছে। চাকরিটা পেলে হয়তো সেই সমস্যার সম্মুখীন হতেন না ববিতা। সময়ের মূল্য কেউ দিতে পারে না। অঙ্কিতার বেতনের সমস্ত টাকা ববিতাকে দেওয়ার আদালতের নির্দেশে আমার ভীষণ খুশি। এই রায় আগামী দিনে আইনের উপর আরও ভরসা বাড়াবে সাধারণ মানুষের। বেআইনি ভাবে চাকরি নিতে গেলে অনেকেই এই রায়কে স্মরণ করবেন আশা করছি।’’