এসএসসির উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিন্হা। —ফাইল চিত্র ।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এ বার ইডির হাতে গ্রেফতার শান্তিপ্রসাদ সিন্হা। আপাতত সোমবার পর্যন্ত ইডি হেফাজতেই থাকবেন এসএসসির উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন প্রধান। নবম-দশমের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালের ১০ অগস্ট শান্তিপ্রসাদকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পরে ৯ সেপ্টেম্বর আবার তাঁকে সিবিআই হেফাজতে নেয়। তার পর থেকে নিজাম প্যালেসেই ছিলেন শান্তিপ্রসাদ। ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠায় আদালত। এর পর থেকে তিনি জেলবন্দিই ছিলেন।
বুধবার নিয়োগ মামলায় শান্তিপ্রসাদকে কলকাতার ইডির বিশেষ আদালত হাজির করানো হয়। আদালতে শুনানি চলাকালীন শান্তিপ্রসাদকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যদিও ইডির আবেদনের বিরোধিতা করে শান্তিপ্রসাদের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত আদালতে জানান, একই অভিযোগে সিবিআই ইতিমধ্যেই তাঁর মক্কেলকে গ্রেফতার করেছে। সেই মামলার চার্জশিটও জমা পড়েছে। এখন তা হলে ইডি কেন নতুন করে শান্তিপ্রসাদকে নিজেদের হেফাজতে চাইছে? প্রশ্ন তোলেন সঞ্জয়। এর পরেই ইডির বিশেষ আদালতের বিচারক ইডির আইনজীবীর কাছে জানতে চান, শান্তিপ্রসাদকে হেফাজতে রাখা ঠিক কি না। কেন ইডি শান্তিপ্রসাদকে হেফাজতে চাইছে, তা-ও জানতে চান বিচারক। উত্তরে ইডি জানিয়েছে, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কোনও আর্থিক তছরুপ হয়েছে কি না এবং তা কী ভাবে হয়েছে, তা জানতে শান্তিপ্রসাদকে জেরার প্রয়োজন। এর পরেই শান্তিপ্রসাদকে ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিশেষ আদালতের বিচারক। সোমবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
উল্লেখ্য, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে ভুয়ো নিয়োগপত্র দেওয়ার অভিযোগ ছিল শান্তিপ্রসাদের বিরুদ্ধে। গ্রুপ সি মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। নিয়োগ সংক্রান্ত যে উপদেষ্টা কমিটি তৈরি করেছিলেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তার চেয়ারম্যান পদে বসানো হয়েছিল শান্তিপ্রসাদকে। অভিযোগ, তাঁর আমলেই মূলত নিয়োগ দুর্নীতি হয়। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই যে এফআইআর দায়ের করেছিল তাতেও প্রথম শান্তিপ্রসাদের নাম ছিল বলে সূত্রের খবর। শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মী এবং সহকারী শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলাতেও বারবার তাঁর নাম উঠে এসেছে। এমনকি, তাঁর রিজেন্ট পার্কের বাড়িতে বেশ কয়েক বার তল্লাশিও চালিয়েছে ইডি এবং সিবিআইয়ের আলাদা আলাদা দল। তাঁকে সিবিআই বার বার জেরা করেছে। এ বার তাঁকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নিল ইডিও।