পঞ্চায়েত ভোট প্রক্রিয়া সাঙ্গ হলেও বিনা যুদ্ধে জয়ীদের ভাগ্য ‘মঙ্গলজনক’ কি না, তার আভাস মিলবে মঙ্গলে। কারণ কাল, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে পঞ্চায়েত ভোটে ই-মনোনয়নের বৈধতা নিয়ে শুনানি। পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, বিনা লড়াইয়ে ফয়সালা হওয়া ৩৪% আসনে ফল ঘোষণা করে সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করা যাবে না। মঙ্গলবারের ওই শুনানিতে ‘মানুষের উন্নয়ন থমকে’ যাওয়াকে হাতিয়ার করতে চায় রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক স্তরে তেমনই প্রাথমিক পরিকল্পনা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
পঞ্চায়েত ভোটে ই-মনোনয়নকে বৈধতা দিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল, তার উপর গত ১০ মে স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। সেই মামলারই শুনানি মঙ্গলবার। মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির দিকে তাকিয়ে রয়েছে রাজ্য। প্রয়োজনে শুনানিতে আদালতে সে কথাও বলতে চাইবে তারা। প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘আমরা চাইছি, আদালত যেমনই নির্দেশ দিক না কেন, প্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হোক। তা হলে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে সমস্যা হবে না।’’ এ ক্ষেত্রে ‘মানুষের উন্নয়ন থমকে যাওয়া’কে অস্ত্র করতে চায় রাজ্য। প্রশাসনিক মহলের ব্যাখ্যা, যে সব গ্রাম পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিতে বিনা লড়াইয়ে ফয়সালা হয়েছে, সেগুলিতে বোর্ড গঠন না হলে উন্নয়নের কাজ থমকে যাবে। সে কথা আদালতে তুলে ধরতে চায় রাজ্য। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েতে বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ রয়েছে অগস্ট পর্যন্ত।
সর্বোচ্চ আদালতে সব দিক বেঁধেই এগোতে চাইছে রাজ্য। প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে তেমনই বার্তা দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েত দফতরকে। ওই ৩৪% আসনে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আশা-আশঙ্কার দোলাচল রয়েছে। আদালত তেমন নির্দেশ দিলে ভোট করাতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। কিন্তু রাজ্য সরকার পুনরায় ভোট করানোর বিরোধিতায় সচেষ্ট হতে পারে।
ভোট-পর্বে অভিযোগের সঙ্গে ই-মেল মারফত মনোনয়নপত্র কমিশন, মহকুমাশাসক, বিডিও দফতরে পাঠিয়েছিলেন বহু প্রার্থী। সেই ই-মনোনয়নগুলির বৈধতা দেওয়ার কোনও কারণ নেই বলে দাবি কমিশনের কর্তাদের। এই সংক্রান্ত সমস্ত নথি ইতিমধ্যে জোগাড় করেছে কমিশন। এ ক্ষেত্রে অবশ্য শুধু কমিশনে জমা পড়া ই-মনোনয়নের তথ্যই আদালতে পেশ করতে পারে কমিশন। এক কর্তার কথায়, ‘‘ই-মনোনয়নের বড় অংশের প্রার্থীদের কোনও স্বাক্ষর নেই। এমনকী, প্রয়োজনীয় নথিও জমা পড়েনি। আদালতে সে কথা জানানো হবে।’’ মামলার শুনানির সময়ে আদালতে থাকতে পারেন পঞ্চায়েত দফতরের সচিব অজিতরঞ্জন বর্ধন। কমিশনের তরফে থাকতে পারেন যুগ্ম সচিব শান্তনু মুখোপাধ্যায়।