শুভেন্দুকে ‘আপদ’ বলে বর্ণনা করেছেন তৃণমূলের এক যুবনেতা। ফাইল চিত্র।
গত বছর ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুর কলেজের মাঠে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হাত ধরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। এ বছর তাঁর দলত্যাগের বর্ষপূর্তি উদ্যাপন করবে তৃণমূল যুব কংগ্রেস। ঘটনাচক্রে, শুভেন্দু একটা সময়ে তৃণমূল যুব কংগ্রেসেরও সভাপতি ছিলেন। তৃণমূল যুব কংগ্রেস ওই দিনটিকে ‘উচ্ছ্বাস দিবস’ আখ্যা দিতে চায়। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে তা বলা হবে কি না, তা এখনও ঠিক হয়নি। যদিও এটা ইতিমধ্যেই ঠিক হয়েছে যে, ওই দিনটি ‘পালন’ করতে গিয়ে দলের যুবকর্মীরা ডিজে বাজিয়ে নাচবেন!
শুভেন্দুর তৃণমূল ছাড়ার বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ২০ ডিসেম্বর ‘অধিকারীগড়’ কাঁথিতে একটি জনসভার আয়োজন করা হচ্ছে। কাঁথির প্রভাত কুমার কলেজের মাঠে আয়োজিত ওই সভায় রাজ্য নেতৃত্বের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তৃণমূল সূত্রের খবর, ১৯ ডিসেম্বর এই সভা করতে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল কলকাতার নেতাদের কাছে। কিন্তু ওইদিন কলকাতায় পুরভোট। তাই সভাটি পরদিন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাই পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল এবং জেলা সংখ্যালঘু সেলের পক্ষে ওই সভার আয়োজন করা হবে ২০ তারিখে। মেচেদা বাইপাসে জমায়েত হয়ে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা কাঁথি যাবেন। তারপর কাঁথি কলেজের মাঠে জনসভা।
কুণাল ছাড়াও ওই সভায় হাজির থাকবেন রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি, পটাশপুরের তৃণমূল বিধায়ক উত্তম বারিক, এগরার বিধায়ক তরুণ মাইতি এবং কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি। সভার আগে কাঁথিতে একটি পদযাত্রাও করবেন তৃণমূল নেতারা। তার পরেই সেখানে পালিত হবে তৃণমূলের ‘উচ্ছ্বাস দিবস’। সভার আয়োজন নিয়ে যুবনেতা সুপ্রকাশের বক্তব্য, ‘‘ওইদিন শুভেন্দুবাবুর দল ছাড়ার এক বছর হবে।’’ বস্তুত, শুভেন্দুকে ‘আপদ’ বলে বর্ণনা করে ওই নেতা বলেছেন, ‘‘ওইদিন দল থেকে আপদ বিদায় হয়েছিল। তাই আমরা কাঁথি শহরেই সে দিনের বর্ষপূর্তি উদযাপন করব।’’
সুপ্রকাশের বক্তব্য, ‘‘২০১৪ সাল থেকে শুভেন্দুবাবু বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। তা তিনি নিজের মুখে স্বীকার করেছেন। দলের সাংগঠনিক পদ নিয়ে, প্রশাসনিক ক্ষমতা ভোগ করে যে ভাবে তিনি দলকে পিঠে ছুরি মেরেছেন, তাতে তিনি তৃণমূল পরিবারের কাছে একজন বিশ্বাসঘাতক বলে প্রমাণিত হয়েছেন। তাই এমন একজন ব্যক্তির দল ছাড়ার দিনটির বর্ষপূর্তিতে যুবকর্মীরা ডিজে বাজিয়ে নাচবেন।’’
প্রসঙ্গত, কাঁথির যে প্রভাত কুমার কলেজের মাঠে ওই সভা হবে, সেখান থেকে অধিকারীদের বাড়ি ‘শান্তিকুঞ্জ’ ঢিল-ছোড়া দূরত্বে। ওইদিনের সভায় সর্বধর্ম সমন্বয়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে সংবর্ধিতও করা হবে।