—ফাইল চিত্র।
মনের ভিতরে দীর্ঘদিন ধরে জমছিল ক্ষোভ। এ বার তা উগরে দিতে শুরু করেছেন পুলিশকর্মীরা। করোনা পরিস্থিতিতে নিজের বাড়ি থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে বদলি করায় সরাসরি ফেসবুকে অভিযোগ জানাচ্ছেন তাঁরা। বিভিন্ন জেলায় পুলিশকর্তার দফতরের সামনে ওই পুলিশকর্মীদের পরিবারের লোকজন বিক্ষোভও দেখাতে শুরু করেছেন। ।
পুলিশের নিচু তলায় ক্ষোভ আছে বিভিন্ন বিষয়ে। তবে ওই স্তরের কর্মীরা এত দিন ক্ষোভের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছেই জানাতেন। অভিযোগ, তিন বছর ধরে রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল, অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর, সাব-ইনস্পেক্টর পদের কর্মীদের বহু দূরে বদলি করার প্রক্রিয়া চলছে। যদিও পরিবর্তনের পরে নতুন তৃণমূল সরকার জানিয়েছিল, যাঁদের ১৫ বছরের বেশি চাকরি হয়ে গিয়েছে, তাঁদের নিজেদের জেলায় এবং তার থেকে কম সময় কর্মরতদের বড়জোর পার্শ্ববর্তী জেলায় বদলি করা হবে। এক পুলিশকর্তা এসে সেই নিয়ম না-মেনে দূরে দূরে বদলি শুরু করেন বলে অভিযোগ।
“এই নিয়ে ক্ষোভ ছিল। পরিবারের লোকেরা দেখা করতে চাইলে ওই পুলিশকর্তা দেখা করেন না। তাঁর ঊর্ধ্বতন অফিসার কোনও ক্ষেত্রে কাছের জেলায় বদলি করার কথা বললেও তিনি সেই ফাইল ফেলে
রেখে দিচ্ছেন,” বলেন রাজ্য পুলিশের এক কর্মী। দিন তিনেক আগে অন্তত ১৪৫৬ জন কনস্টেবলের বদলির নির্দেশ বেরিয়েছে। যাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদে তাঁকে বসিরহাটে, যাঁর বাড়ি বসিরহাটে, তাঁকে মালদহে বদলি করা হয়েছে। করোনা-আবহে পরিবার ছেড়ে এত দূরে যেতে হবে শুনে এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিতে শুরু করেছেন কনস্টেবলেরা।
এক কনস্টেবল লিখেছেন, “আমরা কতটুকু ছুটি পাই, তা সকলেই জানেন। এ ভাবে পরিবার থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করে দিলে আমাদের মানসিকতা কী হবে, সেটা ভেবে দেখা হল না।” অন্য এক জনের বয়ান, “বিদেশে কর্মরত ছেলের বাবা-মায়ের দায়িত্ব নিয়ে দেখভাল করা আমাদের ডিউটি। আমাদের বাবা-মায়ের দায়িত্ব কে নেবে?”
যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ, সেই ডিআইজি (অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) প্রণব দাসকে ফোন করা হলে তিনি জানান, ব্যস্ত আছেন, পরে কথা বলবেন। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, এত কনস্টেবলকে বদলি করে
ঠিক জায়গায় পাঠানো বিশাল কর্মযজ্ঞ। পশ্চিমবঙ্গকে তিনটি জ়োনে ভাগ করে তার মধ্যেই বদলি
করার চেষ্টা চালানো হয়। মুর্শিদাবাদ ও উত্তর ২৪ পরগনা দক্ষিণবঙ্গের
মধ্যেই পড়ে। তা ছাড়া অফিসারদেরও তো বাড়িঘর ছেড়ে দূরে দূরে চাকরি করতে হয়। ওই পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘সকলেই যদি নিজের ঘরের কাছে চাকরি করতে চান, তা হলে তো মুশকিল!’’