‘কঠিনতম’ ভোটের মুখে তিনি ‘অসহায়’। গত শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার আগে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করে এমনটাই জানিয়ে এসেছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ।
অসহায়তার কারণ হিসেবে কমিশনার রাজ্যপালকে বলেছেন, কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভোট করানো সম্ভব নয়। কিন্তু রাজ্য তাঁর কোনও কথাই মানতে চাইছে না। অমরেন্দ্র সে দিন রাজ্যপালকে বলেন, মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু হলেই রাজ্য জুড়ে মারামারি শুরু হবে বলে তাঁর আশঙ্কা। পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সদর্থক পদক্ষেপ করবে কি না, সে নিয়েও তাঁর সংশয় রয়েছে।
এই অবস্থায় তাঁর কী করণীয়, কেশরীর কাছে জানতে চান অমরেন্দ্র। সূত্রের খবর, রাজ্যপাল তাঁকে বলেন, কমিশনারকেই কার্যকর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। মনোনয়ন জমা শুরুর দু’দিনের মধ্যেই কমিশনারের আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। আজ, বুধবার বেলা ১২টায় ফের রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করবেন অমরেন্দ্র। তার আগে আজ সকালে মুখ্যসচিব মলয় দে এবং স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্যকে ডেকে পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল।
কেশরীর সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘রাজভবন কী ভাবছে, কী করবে তা একটি রাজনৈতিক দল আগেই বলে দিচ্ছে।’’ রাজ্যপাল কিছু করতে পারেন কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। সংবিধানের ২৪৩কে(৩) ধারায় বলা আছে, ‘ভোট পরিচালনার সময় রাজ্য নির্বাচন কমিশন অনুরোধ করলে রাজ্যপাল কমিশনের ইচ্ছানুসারে প্রয়োজনীয় কর্মী ও অন্যান্য রসদ দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন।’ এই ধারার বলেই গত পঞ্চায়েত ভোটে তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার মীরা পান্ডে বার বার তৎকালীন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের কাছে গিয়েছিলেন। তিনিও রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজ্য তা মানেনি। শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২৫ হাজার কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে ভোট হয়েছিল। এক কমিশন-কর্তার কথায়, ‘‘মীরা নিজেকে অসহায় ভাবেননি, লড়েছিলেন। অমরেন্দ্র তো গোড়াতেই অসহায় হয়ে হা-হুতাশ করছেন। কিন্তু লড়ছেন না।’’