দিঘায় খাদ্য-অভিযান কবে! প্রশ্ন পর্যটকদের

সৈকতের পাশে সার দেওয়া মাছ ভাজার দোকান দেখে সঙ্গীর হাত ধরে টান মেরেছিলেন এক পর্যটক। কিন্তু সঙ্গী ভদ্রলোকের কড়া গলায় জবাব, ‘‘কবেকার পচা মাছ দিচ্ছে ঠিক নেই। ভাগাড়-কাণ্ড দেখেও কিছু শিক্ষা হয়নি না!’’   

Advertisement

শান্তনু বেরা

দিঘা শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৮ ০২:২১
Share:

দিঘা সৈকতে ঢাকা ছাড়াই বিক্রি হচ্ছে মাছ। নিজস্ব চিত্র

সৈকতের পাশে সার দেওয়া মাছ ভাজার দোকান দেখে সঙ্গীর হাত ধরে টান মেরেছিলেন এক পর্যটক। কিন্তু সঙ্গী ভদ্রলোকের কড়া গলায় জবাব, ‘‘কবেকার পচা মাছ দিচ্ছে ঠিক নেই। ভাগাড়-কাণ্ড দেখেও কিছু শিক্ষা হয়নি না!’’

Advertisement

দিঘা, মন্দারমণি বা তাজপুরে বেড়াতে গিয়ে সামুদ্রিক মাছ ভাজা খাননি, এমন পর্যটকের সংখ্যা খুব কম। কিন্তু কলকাতার ভাগাড়-কাণ্ড সামনে আসার পর থেকেই ওই সব মাছের দোকান-সহ রেস্তরাঁয় মাছ-মাংসের চাহিদা সামান্য হলেও কমেছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। পর্যটকদেরও একাংশ ওই সব মাছের দোকানে প্রশাসনিক অভিযান চালানোরও দাবি করেছেন। উল্লেখ্য, কাঁথি, এগরা, তমলুকের মতো জেলার বিভিন্ন শহরে হোটেল, রেস্তরাঁ ও মাংসের দোকানগুলিতে অভিযান চালিয়েছে সংশ্লিষ্ট পুরসভা। কিন্তু পর্যটনকেন্দ্র দিঘাতে এখনও ওই ধরনের কোনও অভিযান হয়নি।

ভাগাড়-কাণ্ডের জেরে পর্যটকেরাও যে সচেতন হয়েছেন, তা স্বীকার করছেন স্থানীয় বিক্রেতারও। হাওড়া থেকে ঘুরতে যাওয়া সুমিত চক্রবর্তী বলেন, “সন্ধ্যায় দিঘায় বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছর ভাজা, পকোড়া রং মাখিয়ে বিক্রি হতে দেখলাম। মনে হল বাসি। তাই খেলাম না। এভাবে খোলা অবস্থায় বিক্রি হওয়ায় ধুলোবালি উড়ে পড়ছে। একবার অভিযান হলে বোধহয় চিত্রটা বাদলে যেত।’’ ওই সব মাছ যে ফর্মালিনে ধুয়ে রাখা হয়, সেই অভিযোগও করেছেন পর্যটকেরা।

Advertisement

আবার ওল্ড দিঘায় একটি রেস্তরাঁয় খেতে গিয়েছিলেন নিউটাউনের কিরণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবারের অন্যদের চিকেন চাউমিন খাওয়ার ইচ্ছে থাকলেও, সরাসরি এগ চাউমিনের অর্ডার দিলেন কিরণবাবু। তাঁর কথায়, “ভাগাড়-কাণ্ডের পর আর ভরসা পাচ্ছি না। এখানে প্রশাসনিক অভিযান হলে হয়তো চিকেন খাওয়ার ঝুঁকি নেওয়া যেত।’’

যদিও বড়সড় হোটেলের মালিকেরা বাসি মাংস, পচা মাছের ব্যাপারটি উড়িয়ে দিয়ছেন। মন্দারমণির এক রেস্তরাঁ মালিক বলেন, “আমরা চাহিদা মত প্রতিদিন খাবার বানাই। সেই খাবার সব বিক্রি হয়ে যায়। কোনও দিন বিক্রি না হলে তা বাড়ি নিয়ে চলে যাই বা নিজেরাই খেয়ে নিই। কাজেই অভিযান হলেও আমাদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।’’

‘দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, “দিঘায় খাওয়ার ক্ষেত্রে ভয়ের কোনও কারণ নেই। টাটকা খাবার দেওয়ার জন্য সব হোটেলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর প্রশাসনিক অভিযান হলেও কোনও অসুবিধা নেই। বরং তাকে স্বাগত জানাই। এতে পর্যটকদের অহেতুক ভীতি কাটবে।’’

অভিযান প্রসঙ্গে রামনগর ১-এর বিডিও অনুপম বাগ হলেন, ‘‘ভোটের ব্যস্ততা সবে শেষ হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে এখন মাত্র একজন ফুড ইন্সপেক্টর রয়েছেন। আমরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছি। প্রতিনিধি দল গড়ে শীঘ্রই দিঘায় অভিযান হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement