লালবাজারে তিন ঘণ্টারও ওপর জিজ্ঞাসাবাদ শামিকে

শামির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী হাসিন জাহান। লিখিত অভিযোগে তিনি জানিয়েছিলেন, শামি একাধিক নারীর সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছেন

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৪৮
Share:

হাজিরা: স্ত্রীর অভিযোগ নিয়ে উত্তর দিতে লালবাজারে শামি। নিজস্ব চিত্র

কলকাতায় খেলতে এসে পুলিশের সামনে হাজিরা দিয়ে গেলেন মহম্মদ শামি। পুলিশ তলব করেছিল তাঁর দাদা মহম্মদ হাসিবকেও। দু’জনেই বুধবার লালবাজারে এসে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের সামনে বসলেন। যদিও তাঁদের কাউকেই গ্রেফতার করা হয়নি। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে সাংবাদিকদের এড়াতে পুলিশ তাঁদের লালবাজারের প্রবেশ পথ দিয়ে বের করে দেয়।

Advertisement

শামির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী হাসিন জাহান। লিখিত অভিযোগে তিনি জানিয়েছিলেন, শামি একাধিক নারীর সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছেন। তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। শারীরিক ভাবে নির্যাতনের অভিযোগও শামির বিরুদ্ধে করেছিলেন তাঁর স্ত্রী। একই সঙ্গে তাঁর দাদার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন যে, শামির প্ররোচনায় তিনি নাকি বলপূর্বক হাসিনের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন।

সেই সব অভিযোগের ভিত্তিতেই বুধবার দুপুর থেকে শামি এবং তাঁর দাদাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় লালবাজারে। ইডেনে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে আইপিএলের ম্যাচ খেলতে এসেছিলেন ভারতীয় দলের পেসার। সেই সময়ে তাঁকে তলব করে পুলিশ। ম্যাচ হয়ে গেলেও তাই দিল্লি দলের সঙ্গে ফিরে যাননি শামি। দাদাকে নিয়ে লালবাজারে গিয়ে পুলিশের সামনে হাজিরা দেন। কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেছেন, ‘‘শামির স্ত্রীর আনা অভিযোগের উপর ভিত্তি করে দু’জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বেশির ভাগ অভিযোগই অস্বীকার করেছেন শামি। তবে তাঁর কথার সত্যতা যাচাই করে দেখব আমরা।’’

Advertisement

প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় দু’জনকে। পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতাই করেছেন শামি এবং তাঁর দাদা। হাসিন প্রশ্ন তুলেছিলেন, পাকিস্তানের আলিসবা নামে এক তরুণীর সঙ্গে শামির সম্পর্ক নিয়ে। বলেছিলেন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরার পথে দুবাইয়ে আলিসবার সঙ্গে একই হোটেলে সময় কাটিয়েছেন শামি।

একটি অডিয়ো শুনিয়ে হাসিন এমনও দাবি করেছিলেন যে, মহম্মদ ভাই নামে এক জনের কাছ থেকে আলিসবার মাধ্যমে টাকা নিয়েছিলেন শামি। সেই অডিয়ো কথোপকথনের ভিত্তিতে টাকা লেনদেনের ঘটনা নিয়ে তদন্ত করেছিল বোর্ডের দুর্নীতি দমন শাখা। সেই তদন্তের পরে শামিকে নিষ্কলঙ্ক আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। তার পরে তাঁকে বোর্ডের চুক্তিতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়, আইপিএলে খেলার ছাড়পত্রও পেয়ে যান তিনি। সেই কারণে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ চললেও তাঁর আইপিএলে খেলা চালিয়ে যেতে বাধা নেই কারণ, তিনি গ্রেফতার হননি। গোয়েন্দা প্রধানও জানিয়ে দেন, এই মুহূর্তে শামিকে আর ডাকা হবে না।

তবে শামির বৈবাহিক জীবনের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। শুরুতে হাসিন অভিযোগ করার পরেও তিনি বলেছিলেন, মিটমাট করে ফের একসঙ্গে থাকতে চান মেয়ে বেবোর মুখের দিকে তাকিয়ে। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, স্ত্রী সুর নরম করছেন না এবং ক্রমাগত তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বলে যাচ্ছেন দেখে শামিরও মনোভাবে বদল ঘটেছে। তিনি কয়েক জন বন্ধুকে জানিয়েছেন, সব কিছু ভুলে আর তাঁর পক্ষে এক ছাদের নীচে থাকা সম্ভব হবে না। যা শুনে মনে হচ্ছে, বিচ্ছেদের সম্ভাবনাই বেশি।

বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, কলকাতায় দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের হয়ে খেলতে এসে মেয়েকে দেখতে চেয়েছিলেন শামি। সেই সুযোগ নাকি তাঁকে দেওয়া হয়নি। তাতে আরওই ধাক্কা খেয়েছে শান্তির সম্ভাবনা। মেয়েকে দেখতে চাওয়ার দাবি নিয়ে আইনের দ্বারস্থও হতে পারেন শামি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement