—ফাইল চিত্র।
আসানসোলের ছ’মাসের শিশুকন্যা খুশি ঘোষের মৃত্যুতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের জনস্বার্থ মামলা শুক্রবার গৃহীত হল কলকাতা হাইকোর্টে। চিকিৎসায় গাফিলতির জেরে তার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কিছু দিন আগে ওই মামলা দায়ের করা হয়। প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এ দিন গৃহীত হওয়ার পরে মামলাটির শুনানিও হয়। বেঞ্চ জানিয়েছে, গরমের ছুটির পরে এই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষে আইনজীবী শ্রীকান্ত দত্ত আদালতে জানান, মার্চে তিন-চার দিন ধরে জ্বরে ভুগতে থাকা খুশিকে আসানসোলের বেসরকারি একটি হাসপাতালে নিয়ে যান তার বাবা অক্ষয়কুমার ঘোষ। ভর্তির দিন সন্ধ্যা পৌনে ৭টা নাগাদ হাসপাতালের নার্স তাকে একটি ইঞ্জেকশন দেন। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই তার সর্বাঙ্গে র্যাশ বেরোয়। অভিযোগ, যে-চিকিৎসকের অধীনে খুশিকে ভর্তি করানো হয়, তিনি সেই সময় হাসপাতালে ছিলেন না। শিশুর পরিবারের অভিযোগ, ইঞ্জেকশন দেওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই খুশি জ্ঞান হারায়। রাত ৯টা নাগাদ খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক হাসপাতালে পৌঁছন এবং খুশিকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে নিয়ে যান। রাত ১০টা নাগাদ হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই রাতেই খুশির পরিবার তাকে সমাহিত করে।
শ্রীকান্তবাবু আদালতে অভিযোগ করেন, খুশির বাবা কয়েক দিন পরে পুলিশের কাছে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ জানাতে গেলে প্রথমে তাঁর অভিযোগ নেওয়া হয়নি। পরে অভিযোগ নিলেও পুলিশ ফৌজদারি বিধি মেনে মাটির নীচ থেকে দেহ তুলে ময়না-তদন্তে পাঠায়নি। কী কারণে খুশির মৃত্যু হল, মৃত্যুর শংসাপত্রে কী কারণ দেখানো হল, তারও খোঁজ নেয়নি পুলিশ।
সরকারি কৌঁসুলি অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চে জানান, এই নিয়ে জনস্বার্থের মামলা হতে পারে না। আদালতের এই মামলা গ্রহণ করা উচিত হবে না।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আইনজীবী জানান, পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করার আর্থিক সঙ্গতি নেই অক্ষয়বাবুর। তাই তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। চিকিৎসার গাফিলতিতে মৃত্যুর অভিযোগ ক্রমেই বেড়ে চলায় সংগঠন জনস্বার্থের মামলা দায়ের করেছে।