প্রতীকী ছবি।
বয়স মেরেকেটে সাতাশ। আদি বাড়ি বিহার। বছর সাতেক ধরে সে ঘাঁটি গেড়েছিল কলকাতায়। তার বিশেষ টিমে যারা রয়েছে, তারা সকলেই বিহারের বাসিন্দা। সাতাশ বছরের সেই আক্রমই কলকাতায় বসে নিয়ন্ত্রণ করছিল আন্তঃরাজ্য কিডনি পাচার চক্র। পুলিশ তাকে ধরতে সক্রিয় হতেই গা ঢাকা দিয়েছে সে। তবে তার বিষয়ে বেশ কিছু তথ্য হাতে এসেছে পুলিশের।
যদিও কিডনি পাচার কাণ্ডে ন’জনকে গ্রেফতারের পরেও জট বিশেষ কাটছে না। কারণ ভিন্ রাজ্যের যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাদের বাড়িতে খবর পাঠানো হলেও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত কেউ আসেননি। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসি (জোন ১) কে কান্নন বলেন, ‘‘ভিন্ রাজ্যের যারা ধরা পড়েছে, স্থানীয় থানা মারফত তাদের বাড়িতে খবর পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। ফলে ধৃতেরা যে ঠিকানা দিয়েছিল তা যাচাই করতে সেখানে পুলিশ পাঠানো হবে।’’ সেই জন্য পুলিশের একটি বিশেষ দল তৈরি করা হয়েছে।
কিডনি পাচার কাণ্ডে ইএম বাইপাস লাগোয়া এলাকার যে হাসপাতালের নাম জড়িয়েছিল, সেই হাসপাতাল বুধবার রাতে বেশ কিছু নথি নৈহাটি থানার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। গত তিন মাসে ওই হাসপাতালে কাদের কিডনি প্রতিস্থাপন হয়েছে, সেই তথ্য তাতে রয়েছে। যদিও হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ চেয়েও পায়নি পুলিশ। কে কান্নন জানান, যাঁদের কিডনি প্রতিস্থাপিত হয়েছে ওই হাসপাতালে, তাঁদের বাড়িতে পুলিশ পঠানো হবে। তাঁরা কোথা থেকে ডোনার জোগাড় করলেন, তা-ও তদন্ত করে দেখা হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, বছর সাতেক আগে আক্রম বিহার থেকে এসে খিদিরপুর-গার্ডেনরিচ এলাকায় ঘাঁটি গাড়ে। শুরুতে সে বেশ নানা ধরনের বেআইনি কাজ করত। তার পরেই সে কিডনি পাচার শুরু করে। কলকাতাতে আক্রমের দু’টি ফ্ল্যাট রয়েছে। নিজের বিশেষ দল তৈরি করতে বিহার থেকে কয়েক জন পরিচিতকে নিয়েও আসে। তাদেরই একজন ইকবাল আনসারি। জোগাড় করা ডোনারদের দেখাশোনা করা থেকে শুরু করে যাবতীয় দায়িত্ব ছিল তার উপরেই।
আক্রমের খোঁজে পুলিশ তার ডেরায় হানা দিলেও ধরা যায়নি। পুলিশ চাইছে, ধৃতেরা হেফাজতে থাকতে থাকতেই আক্রমকে ধরতে। তা হলে জট অনেকটা কাটবে বলে পুলিশের অনুমান।