—ফাইল চিত্র
বল্লমের খোঁচায় বাঘের মৃত্যুর পরে দুই যুবক-সহ একদল লোকের নামে পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছিল বন দফতর। রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া অবশ্য স্পষ্ট করে দিলেন, এই ঘটনায় নির্দিষ্ট কারও বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে না। মামলা হচ্ছে ‘অজ্ঞাতপরিচয়’ একদল লোকের বিরুদ্ধে।
কারা বাঘ মেরেছে, তা করে জানা যায়নি? এসপি-র জবাব, “কিছু সূত্র উঠে এসেছে। তদন্ত চলছে। এর বেশি কিছু বলব না।” বন দফতরের একটি সূত্র আবার জানাচ্ছে, ময়নাতদন্ত চলাকালীন জানা গিয়েছে, বাঘটি আগে থেকেই চোটে কাবু ছিল। আঘাত ছিল পায়ে ও গায়ে। তাই বল্লমের ঘা খেয়ে সে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
বন দফতরের অভিযোগপত্রে অবশ্য ঘটনার দিন বাঘের আঁচড়ে জখম বাদল হাঁসদা এবং বাবলু হাঁসদার নাম ছিল। তবে মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন ওই দুই যুবকের নামে মামলা হচ্ছে না। পুলিশের বক্তব্য, আহতেরা জানিয়েছেন, তাঁরা জানতেনই না ওই জঙ্গলে বাঘ রয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, “ওই দু’জন জখম হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পরে বাঘটি মারা যায় বলে জানা যাচ্ছে। হতে পারে, পরে কোনও শিকারির দল বাঘটাকে জখম করে।” ১২ জন গ্রামবাসীকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে পুলিশ।
বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, বাঘ খুনে ধরপাকড় শুরু হলে ভোটের মুখে জনরোষ তৈরি হতে পারে। তাই ‘অজ্ঞাতপরিচয়’দের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে। বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শমিত দাসের কথায়, “ভোেটর অঙ্কেই তদন্তে গড়িমসি করা হচ্ছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির যদিও দাবি, “পুলিশ তদন্ত করছে। সবেতে রাজনীতি খোঁজা ঠিক নয়।”
গত শুক্রবার বাগঘোরার জঙ্গলে শিকারিদের বল্লমে প্রাণ গিয়েছে রয়্যাল বেঙ্গলের। তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, বাঘটি প্রতিরোধ করল না কেন? বনকর্তারা জানাচ্ছেন, বাঘটি যখন এসেছিল, তখন সুস্থ ছিল। লালগড়ের জঙ্গলে তার ছবিতেও চোট বোঝা যায়নি। জেলার এক বনকর্তার কথায়, “চোট সপ্তাহ দুয়েক আগের হবে। বাঘটি ঝোপঝাড়ে, খালে অনেক লাফঝাঁপ করেছে। তখনই হয়তো আঘাত পেয়েছে।”