পাঁচ বছর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক দিল্লি-সফরেই প্রথম রাজনৈতিক প্রচারের আলোয় এসেছিলেন তিনি। সে বার যোজনা কমিশনের দফতরের বাইরে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রকে হেনস্থা করার ঘটায় নাম জড়িয়েছিল এসএফআইয়ের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের। পাঁচ বছর পরে সেই দিল্লি-সফরে গিয়ে মমতাই কাছে ডেকে নিলেন ‘নির্বাসিত’ ঋতব্রতকে!
সিপিএম থেকে বহিষ্কারের পরে ঋতব্রত এখন রাজ্যসভায় ‘দলহীন’ সাংসদ। মমতা চান, দলহীন অবস্থাতেই তৃণমূলের জন্য কাজে লাগানো হোক তরুণ এই সাংসদকে। পুরনো দল থেকে বহিষ্কারের পরে রাজ্যসভায় বাংলার স্বার্থ সংক্রান্ত প্রশ্নের সংখ্যা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন ঋতব্রত। মমতার যুক্তি, তৃণমূল এখন রাজ্যসভায় যা সময় পায়, এক জন বাড়তি সাংসদ পেলেও তা আর বাড়বে না। তার চেয়ে দলহীন হিসেবে ঋতব্রত যা সময় পাবেন, সেটাও তৃণমূলের পক্ষে গেলে তাঁদেরই ভাল। দলের সংসদীয় নেতাদের প্রতি তাই তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশ, হাতে দলের পতাকাটা শুধু না দিয়ে ঋতব্রতকে কাজে লাগাতে হবে! আর সেই কাজে সাংসদ সফল হলে তাঁর জন্য অন্য পরিকল্পনাও আছে।
কী পরিকল্পনা? তৃণমূল সূত্রের ইঙ্গিত, রাজ্যসভায় তাঁর দায়িত্ব পালনে মমতা খুশি হলে আগামী লোকসভা ভোটে রাজ্যের শাসক দলের টিকিট পেতে পারেন ঋতব্রত। কলকাতার উপকণ্ঠে লোকসভা কেন্দ্র বরাদ্দ হবে তাঁর জন্য। সম্ভাব্য কিছু জায়গায় ঋতব্রত যাতে কর্মসূচি পান, তৃণমূলের নেতাদের এখন থেকে সেই ব্যবস্থা করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল নেত্রীর অঙ্ক, ঋতব্রতকে লোকসভায় প্রার্থী করলে বাম শিবির থেকে কিছু বাড়তি ভোট তাঁদের দিকে আসতে পারে। রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, যুব তৃণমূল সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে বসে ঋতব্রতকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছেন মমতা।
ঋতব্রত অবশ্য মুখ খোলেননি। তাঁর মন্তব্য, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দিল্লি এসেছেন। আমি প্রণাম করতে গিয়েছিলাম। ’’ আর তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘সংসদে ঋতব্রতের ভূমিকা খুব ভাল। ওকে বাংলার স্বার্থেই কাজে লাগানো উচিত।’’