নাড়ুগোপাল মালো। ফাইল চিত্র।
আইআইটি দিল্লির ছাত্রাবাসে বাঙালি ছাত্রের অপমৃত্যুতে তদন্তের দাবি তুললেন তাঁর পরিবারের লোকজন।
হুগলির ত্রিবেণীর সুকান্ত পল্লির বাসিন্দা নাড়ুগোপাল মালো নামে রসায়নের ওই ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ মিলেছিল শুক্রবার। ময়নাতদন্তের পরে শনিবার সকালে তাঁর কফিনবন্দি মৃতদেহ বিমানে করে নিয়ে ফেরেন মেজদা বেচুরাম। তিনিও কর্মসূত্রে দিল্লিতেই থাকেন। কিন্তু কী কারণে মেধাবী ছেলেটি আত্মঘাতী হল, তা নিয়ে অন্ধকারে পরিবারের লোকজন।
মৃতের মা উর্মিলা বলেন, ‘‘ছেলের আত্মহত্যার পিছনে কারণ রয়েছে। ছেলেকে ফিরে পাব না। কিন্তু তদন্ত করে মৃত্যুর কারণ দেখা প্রয়োজন পুলিশের।’’ মৃতের বড় বৌদি অমৃতা বলেন, ‘‘প্রায় প্রতিদিনই নাড়ুগোপাল তাঁকে ফোনে বাড়ির সকলের খোঁজ নিতেন। ভাই সব আমাকে বলত। ও সমস্যায় পড়লে আমি ওর দাদাকে বলতাম। কী এমন ঘটল যে ছেলেটা আত্মহত্যার পথ বেছে নিল!’’ বেচুরাম বলেন, ‘‘ঘটনার পিছনে কোনও রহস্য রয়েছে কি না জানতে দিল্লি ফিরে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করব।’’
শুক্রবার সকালে দেহটি উদ্ধারের সময়ে ছাত্রাবাসে নাড়ুগোপালের ঘর থেকে সুইসাইড নোট পেয়েছে দিল্লি পুলিশ। তাদের দাবি, ওই নোটে নাড়ুগোপালের এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে ছেলেবেলা থেকে তাঁকে যৌন হেনস্থার কথা রয়েছে। ওই অভিযোগ ঠিক কিনা দেখা হচ্ছে। পকসো আইনে মামলা হয়েছে। বিষয়টি পশ্চিমবঙ্গ পুলিশকে জানানো হয়েছে। আত্মহত্যার আগে ছেলেটি মানসিক অবসাদের ওষুধও খেয়েছিল বলে তদন্তে জানা গিয়েছে।
এ ব্যাপারে তাঁদের কিছুই জানা নেই বলে জানান নাড়ুগোপালের পরিবারের লোকেরা। ফলে, বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। ওই পরিবার সূত্রে খবর, অসুস্থ হয়ে পড়ায় এক মাস আগে নাড়ুগোপাল পরীক্ষা দিতে পারেননি। ৬ এপ্রিল ঘুমের ওষুধ খেয়ে তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে তাঁকে দিল্লিতে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে কিছু দিন মেজদার কাছে থেকে ছাত্রাবাসে ফেরেন নাড়ুগোপাল। শুক্রবার ওই কাণ্ড। বেচুরাম বলেন, ‘‘ভাই হাসপাতাল থেকে ফিরে বলেছিল, পড়াশোনার জন্য রাতে ঘুম হয় না বলে ও ঘুমের ওষুধ খেয়েছিল। এ বার যে কী হল, কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক হয়েছিলেন নাড়ুগোপাল। সেখানকার শিক্ষকেরাও তাঁর মৃত্যু মানতে পারছেন না। শিক্ষক গান্ধী কর বলেন, ‘‘ও খুব চুপচাপ স্বভাবের ছিল। খারাপ লাগছে।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের একাংশ মনে করছেন, দিল্লির পরিবেশের সঙ্গে নাড়ুগোপালের মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়েছিল।