উৎসবে ঘুঁটের নানা মডেলের প্রদর্শনী। —নিজস্ব চিত্র।
প্রদর্শনীতে ঘুঁটে দিয়ে নানা আকৃতির রকমারি জিনিস দেখে অনেকেই অবাক হচ্ছিলেন। কচ্ছপ আর খরগোশের দৌড়ের গল্পের মডেল দেখে এক দর্শকের বিস্ময়, ‘ঘুঁটে দিয়ে এ সবও বানানো যায়’!
হলদিয়ার সুতাহাটায় সুবর্ণজয়ন্তী ভবনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্রেক্ষাগৃহে তখন তিলধারণের জায়গা নেই। উপচে পড়ছে ভিড়। রবিবার হলদিয়ায় ঘুঁটে উৎসব-প্রদর্শনী ঘিরে দেখা গেল এমনই উৎসাহ।
উৎসবে ঘুঁটে শিল্পীদের পসরায় ঠাঁই পেয়েছে হাতি, ঘোড়া থেকে ঈশপের গল্প। ছিল খোঁপা থেকে চন্দ্রহার, চিতল মাছ, সুদর্শনচক্র-সহ আরও অনেক কিছু। ঘুঁটে উৎসবের আয়োজক প্রাক্তন শিক্ষক সুতাহাটার রাধাকান্ত চক্রবর্তী জানালেন, উৎসবে ঘুঁটে নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। প্রকাশিত হয়েছে ঘুঁটে বিষয়ক পত্রিকা। র্যাম্প শো-এর আদলে ঘুঁটে নিয়ে শিল্পীরা মঞ্চ পরিক্রমা করেন। যা দেখে বয়ে গিয়েছে হাততালির ঝড়।
অভিনব ঘুঁটে উৎসব মন কাড়ল দর্শকদের। দেখুন ভিডিয়ো
রবিবারই ওই উৎসবে সংবর্ধনা দেওয়া হয় সুতাহাটার ৪০ জন ঘুঁটে শিল্পীকে। শুধু উৎসবের আনন্দ নয়, ছিল পেশাদারিত্বের ছোঁয়াও। ঘুঁটে উৎসবে আগত অতিথিদের নাম নথিভুক্ত করার পর দেওয়া হয় ঘুঁটের ব্যাজ। আমন্ত্রণ লিপিও অভিনব। অশত্থ পাতাকে গোবর জলে ডুবিয়ে রেখে তার জালক বের করে তার ওপর এলাকার পাঁচ জন শিল্পীকে দিয়েই আঁকানো ছবি সংবলিত আমন্ত্রণলিপি তৈরি হয়েছিল।
আরও পড়ুন: আইসিইউ থেকে মুক্ত দিলচাঁদ, ছাড়া পাচ্ছেন শীঘ্রই
আরও পড়ুন: ৫ গুণ বেতন বাড়ল মন্ত্রীর সহকারীদের
হলদিয়ার একটি কলেজের প্রশাসনিক আধিকারিক সুবিমল জানা বলেন, ‘‘এ রকম উৎসব ভাবা যায় না।’’ সুতাহাটা পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তাপস মাইতি জানান, এমন কাজ আগে দেখা যায়নি। সে দিক থেকে অভিনব তো বটেই। হলদিয়ার উপ পুরপ্রধান জানান, মনে রাখার মত একটি উৎসব। উৎসবের উদ্দেশ্য নিয়ে রাধাকান্তবাবু জানান, জীবাশ্ম জ্বালানি ফুরিয়ে যাবে এক দিন। সেই সচেতনতার বার্তা দিতেই এই উৎসব। উৎসবে আগত অতিথিদের ঘরে তৈরি মিষ্টি ও নানা জাতের নাড়ু উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। গোটা অনুষ্ঠানে ঘুঁটের পরশ ছিল পরতে পরতে। প্রেক্ষাগৃহে জ্বালানো হয়েছিল পেল্লাই সাইজের ঘুঁটের ধূপ।
দিনের শেষে উৎসব-প্রদর্শনী দেখে দর্শকেরা যখন বেরোচ্ছিলেন, তখনও অনেকের চোখে-মুখে ছিল বিস্ময়।