বিধি ভেঙেও বহাল পাইলট, আশঙ্কা উড়ানে

কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্বের আগরতলা-শিলং-ডিমাপুর রুটে ডেকানের উড়ান যে-দিন চালু হল, তার পরের দিনই নিয়ম ভাঙার অভিযোগ উঠল এক বিদেশি পাইলটের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই পাইলট ছোট বিমান নিয়ে নির্দেশ লঙ্ঘন করে উড়তে উড়তে ইন্ডিগোর বিমানের কাছে চলে গিয়েছিলেন।

Advertisement

সুনন্দ ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৮ ০৩:২৬
Share:

কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্বের আগরতলা-শিলং-ডিমাপুর রুটে ডেকানের উড়ান যে-দিন চালু হল, তার পরের দিনই নিয়ম ভাঙার অভিযোগ উঠল এক বিদেশি পাইলটের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই পাইলট ছোট বিমান নিয়ে নির্দেশ লঙ্ঘন করে উড়তে উড়তে ইন্ডিগোর বিমানের কাছে চলে গিয়েছিলেন।

Advertisement

এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পাইলটকে বসিয়ে দেওয়াই নিয়ম। কিন্তু সেই বিদেশি পাইলট এখনও বিমান চালাচ্ছেন। তদন্তে নেমে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। দোষ প্রমাণিত হলে ফের প্রশিক্ষণ নিতে হবে ওই পাইলটকে। তাতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে।

সবে এই মাসে ওই রুটে উড়ান শুরু করেছে ডেকান। তাদের পাইলটকে বসিয়ে দিলে কলকাতা থেকে আঞ্চলিক উড়ান প্রকল্পের পরিষেবা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হবে। এখন কলকাতা থেকে সপ্তাহে ছ’দিন আগরতলা-শিলং-ডিমাপুর ঘুরে ফিরে আসছে বিমান। ১৯ আসনের বিচক্র্যাফ্ট বিমানটি চালাচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পাইলট। সহকারী পাইলট অবশ্য ভারতীয়।

Advertisement

২ মে ঢাকার আকাশে কাছাকাছি চলে এসেছিল দুই বিমান। আগরতলা থেকে কলকাতা ফিরছিল ডেকান। কলকাতা থেকে আগরতলা যাচ্ছিল ইন্ডিগো। ঠিক তার আগের দিন, ১ মে ওই রুটে উড়তে শুরু করেছিল ডেকান। অভিযোগ, সদ্য বিদেশ থেকে আসা পাইলট সম্ভবত ঢাকা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর নির্দেশ বুঝতে পারেননি। তাঁকে আট হাজার ফুট উপরে থাকতে বলা হয়েছিল। তিনি আরও উপরে উঠতে শুরু করেন। তাতেই বিপত্তি বাধে।

বিশ্ব জুড়ে বিমান পরিবহণের নিয়ম অনুযায়ী আকাশে উপরে-নীচে দু’টি বিমানের মধ্যে ন্যূনতম এক হাজার ফুট ব্যবধান বজায় রাখার কথা। ডেকানের ওই বিমান সেই নিয়ম ভেঙে তার উপরে থাকা ইন্ডিগোর বিমানের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। শেষ মুহূর্তে দু’টি বিমানের ককপিটেই বিপদসঙ্কেত বেজে ওঠায় সতর্ক হয়ে যান দুই পাইলট। দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় জোড়া বিমান। তদন্তে নেমে দুই বিমানের সে-দিনের ককপিটের যাবতীয় তথ্য এবং পাইলটদের সঙ্গে ঢাকা এটিসি-র কথোপকথনের রেকর্ড বাজেয়াপ্ত করেছে ডিজিসিএ। প্রাথমিক তদন্তে যাবতীয় তথ্যপ্রমাণ ডেকানের ওই বিদেশি পাইলটের বিরুদ্ধেই যাচ্ছে।

গত নভেম্বরে কলকাতা থেকে আঞ্চলিক উড়ান প্রকল্পে বিমান চালানোর কথা ছিল ডেকানের। ঠিক হয়েছিল, কলকাতা থেকে কোচবিহার, দুর্গাপুর, বাগডোগরা, বার্নপুর, রৌরকেলা, জামশেদপুরে উড়ান চালাবে ডেকান। তা ছাড়াও কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতের কয়েকটি শহরেও তাদের ওই প্রকল্পে উড়ান চালানোর কথা ছিল। কিন্তু বিমান পেতে পেতেই মাস গড়িয়ে যায়। মাঝখানে ডেকানকে সতর্কও করে দেন বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ। শেষে জুনের মাঝামাঝি কলকাতায় একটি বিচক্র্যাফ্ট বিমান নিয়ে আসে ডেকান। পাইলট পেতেও বেশ কিছুটা সময় পেরিয়ে যায়। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ১ মে শুরু হয় উড়ান।

ঠিক তার পরের দিনেই আকাশে ওই বিপত্তি সত্ত্বেও বিদেশি পাইলট এখনও উড়ান চালাচ্ছেন কী ভাবে? ডিজিসিএ-র এক কর্তা জানান, সব ক্ষেত্রেই যে তদন্ত চলাকালীন সংশ্লিষ্ট পাইলটকে বসিয়ে দেওয়া হয়, তা নয়। এ ক্ষেত্রে তদন্ত রিপোর্ট কলকাতা থেকে দিল্লিতে পৌঁছনোর পরেই তাঁরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

অভিযুক্ত পাইলটকে বসিয়ে দিলে কি রুটের বিমানটিও বসে যাবে? ডেকানের সঙ্গে যোগাযোগ করেও এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement